কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে মাছ উৎপাদন। গত ১০ বছরে চাহিদা মিটিয়ে এখন উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে এ জেলার উৎপাদিত মাছ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখন দেশের অন্যান্য স্থানেও এ মাছ সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন জেলার মাছচাষীরা। সমৃদ্ধ হচ্ছে জেলার অর্থনীতি।
রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর উপজেলার কুস্তা গ্রামের মজিবর জানান, ১৫ একর আয়তনের সরকারি জয়সাগর পুকুরটি লিজ নিয়ে পুকুরপাড়ে বসবাসকারীরা সমবায়ের মাধ্যমে ৮ বছর ধরে মাছ চাষ করে আসছেন। এ জন্য তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মাছের খাবার ও পোনা সংগ্রহের জন্যও দেয়া হচ্ছে সরকারি সাহায্য। মাছ বিক্রির সময় সরকারের দেয়া টাকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ফেরত দেয়া হয়। এতে খরচ বাদে তাদের প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ টাকা আয় হয়। যথাযথ তদারকির ফলে উৎপাদনের পাশাপাশি বাড়ছে আয়।
জেলা মত্স্য কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, জেলায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিভিন্ন প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে দুস্থদের মধ্যে সরকারি পুকুর লিজ দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে মাছ চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণও সরবরাহ করা হচ্ছে। নিয়মিত পরামর্শ প্রদানসহ সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সিরাজগঞ্জ মত্স্য সম্পদের জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে চলন বিলে দেশি প্রজাতির বিপুল পরিমাণ মাছ আহরণ করা হয়। এর পাশাপাশি জেলায় অসংখ্য পুকুর, নদী, নালা, খাল, বিল ও জলাশয় রয়েছে। মত্স্য বিভাগের পরামর্শে এ সব স্থানে রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙ্গাশ, বিগ্রেট, জাপানি রুই, গ্রাসকার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে। এছাড়া সরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্মুক্ত জলাশয়েও মাছ চাষ করা হচ্ছে। ফলে প্রতিবছরই জেলায় মাছের উৎপাদন বাড়ছে।
জানা যায়, এ বছর জেলায় বার্ষিক মাছের চাহিদা ৫৩ হাজার ৭২৯ টন। কিন্তু উৎপাদন হয়েছে ৫৭ হাজার ৫০৪ টন। অর্থাত্ জেলার চাহিদার চেয়ে প্রায় চার হাজার টন মাছ বেশি উৎপাদন হয়েছে। গত দশ বছরে এ উৎপাদন হার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা মত্স্য বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় পুকুর রয়েছে মোট ১৮ হাজার ৮৪৬টি। এর মধ্যে সরকারি ১ হাজার ১৯৪ ও ১৭ হাজার ৬৫২টি বেসরকারি পুকুর রয়েছে। এছাড়া ২৩৬টি জলমহাল রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ৬৬টি ও বেসরকারি ১৭০টি। এছাড়া জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যমুনা, ফুলজোড়, করতোয়া, হুরাসাগর, গুমানী, বড়াল, ইছামতিসহ বিভিন্ন নদীর ২৭ হাজার ১৯২ হেক্টর আয়তন জুড়ে মাছ আহরণ করা হচ্ছে।
সুত্রঃ বনিক বার্তা/ কৃপ্র/ এম ইসলাম