কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : বাজারে বেড়েই চলেছে চালের দাম।গত দুই মাসের প্রতি সপ্তাহেই বেড়ে চলছে রাজধানীর বাজার গুলোতে মোটা চালের দাম। কেজিপ্রতি ৩৫/৩৬ টাকায়। যা এ বছরের শুরুতেও ছিলো ২৫-২৬ টাকা । খুচরা বাজারে মোটা চাল কেজিপ্রতি ৩৮ টাকা । সেই সাথে বেড়েছে সরু ও মাঝারি দানার চালের দামও । গত এক মাসে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। ভারত থেকে আমদানী ও দেশে ভালো উৎপাদন কমিয়ে ছিল চালের দাম । ফলে কৃষকেরা ব্যাপক লোকসান দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
কৃষকদের সুরক্ষার জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার চাল আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করে। তাছাড়া এ মৌসুমেও সরকারি মূল্য ধরা হয় কেজিপ্রতি ৩২ টাকা, যা উৎপাদন খরচের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা বেশি। চালকল মালিক ও বিক্রেতাদের দাবি, এ দুটি কারণেই চালের দাম বাড়ছে। এছারা গত বোরো মৌসুমে আবাদ কমে যাওয়াও দাম বাড়ার একটি কারণ বলে জানান তারা। ঢাকার বাবুবাজার-বাদামতলীতে মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি৩৫/ ৩৬ টাকা। ব্রি-২৮ চাল কেজি ৪০/ ৪১ টাকা ও মিনিকেট চাল ৪৫ / ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে্। মাস খানেক আগেও মোটা জাতের গুটি ও স্বর্ণা চালের দাম ছিলো কেজিপ্রতি ২৮/২৯ টাকা । এরপর তা কয়েক দফায় বেড়েছে। এক ব্যাবসায়ী বলেন, এবার সরকার চাল একটু দেরি করে কিনছে। তাছাড়া মোটা ধানের আবাদও নাকি এখন কম হচ্ছে। ঢাকার খুচরা দোকানে কেজিপ্রতি ৩৮ টা: মাঝারি ৪২/৪৩ টাকা ও মিনিকেট ৪৮/৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দৈনিক খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত রোববার ঢাকায় মোটা চালের কেজিপ্রতি ছিল ৩৬/৩৭ টাকা। খাদ্য অধিদপ্তর গত মে মাস থেকে বোরো মৌসুমের চাল সংগ্রহ শুরু করে। এ পর্যন্ত তারা প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার টন ধান ও ৪ লাখ ২১ হাজার টন চাল সংগ্রহ করেছে। চালকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী জানান, সরকার মোটা চাল কিনার করনেই বাজারে সরবরাহ টান পড়েছে বাড়ছে দামও। দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছু মিল-মালিকও চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে চাল সরবরাহ করতে পারছেন না। বেড়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়ও। রাজশাহীতে মোটা চালের দাম বেড়েছে ১০/১১ টাকা। যার প্রভাবে সরু চালও কেজিতে ২ / ৪ টাকা বেড়েছে।রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন থেকে দুই মাস আগেও খুচরা বাজারে স্বর্ণাচাল কে:২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই মাসের ব্যবধানেএকই বাজারে ওই চাল বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৩৬ টাকায় । ব্রি-২৮ চাল ৩৮ টাকা।রাজশাহীর এক পাইকারি চাল ব্যবসায়ী বলেন সরকারি গুদামে মোটা চাল কেনা হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩২ টাকায় । তবে দাম বাড়ার সুফল পাচ্ছেন না, কৃষকেরা, চলে যায় ব্যবসায়ীদের হাতে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে এবার প্রথম দফায় ৬ হাজার ৪০৯ টন চাল কেনার জন্য চালকল মালিকদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। ১ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত কেনা হয়েছে ৪ হাজার ২৫৫ টন চাল। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাল সংগ্রহ করবে সরকার। রাজশাহীর এক চাল ব্যবসায়ী বলেন, মোটা চালের দাম বেড়ে যাওয়াতে চিকন চালের বাজারেও প্রভাব পড়েছে। প্রায় কাছাকাছি দামে অপেক্ষাকৃত সরু চাল পাওয়া যাচ্ছে। তাই ক্রেতারা এখন স্বর্ণা বাদ দিয়ে ব্রি-২৮ চাল কেনা শুরু করেছেন। এতে বেড়েছে ব্রি-২৮ চালের চাহিদা। যেখানে বিদেশে চাল রপ্তানীর পরিকল্পনা সেখানে আবার মোটা চালের দাম বাড়ছে কেন ?
কৃপ্র /জ ই মাসুদ/ এম ইসলাম