কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নাটোর জেলার মত্স্য ভাণ্ডার খ্যাত দেশের সর্ববৃহত্ বিল চলনবিলে চলছে অবাধে মত্স্য নিধন। সেই সাথে আত্রাইসহ সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন খালবিলে ও সমানতালে নিষিদ্ধ সুতি ও কারেন্ট জাল দিয়ে মা ও পোনা মাছ নিধনের উত্সব চলছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও কাজে আসছে না। রাতারাতি আবার স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি, প্রভাবশালীমহল ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় বিলে ও নদীতে বাঁধ দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকার করা হচ্ছে। ফলে মাছের অবাধ চলাচল ও স্বাভাবিক প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি চলনবিলের আমন ধান, মালবাহী নৌকা যাতায়াতসহ তীরবর্তী এলাকার স্থাপনাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। খবর ইত্তেফাক অনলাইনের।
সরেজমিন পৌর শহরের আত্রাই নদীর কতুয়াবাড়ী, বিলদহর, কালিনগর, কৃষ্টপুর, সারদানগরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সুতি জাল দিয়ে ছোট বড় মাছ নিধন করা হচ্ছে। অপরদিকে চলনবিলের দক্ষিণ দমদমা, জোলার বাতা ও উপজেলার বেড়াবাড়ী, ইটালি, সাতপুকুরিয়া, তাজপুর, ডাহিয়া, তিশিখালী, চৌগ্রাম, তেলিগ্রাম, সিধাখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধে মাছ শিকার করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, চলনবিল, আত্রাই, গুরনাই নদীসহ বিভিন্ন খালের দ’ুপাশে ঘন করে বাঁশ পুতে বানা ও বেড়ার মাধ্যমে নদীকে ছোট করা হয়েছে এবং প্রবল স্রোত তৈরি করে সুতি জাল ব্যবহার করা হচ্ছে । এতে করে যাত্রী ও মালবাহী নৌকাগুলো সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে । তাছাড়া ছোটবড় দুর্ঘটনাও ঘটছে। এমনকি এতে প্রাণহানিরও আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে এলাকাবাসী ঘণ্টার পর ঘণ্টা নৌকা আটকে রাখারও অভিযোগ করেছেন।
এদিকে মত্স্য অফিস সূত্র জানায়, অবৈধ সুতি জাল ও মাছ ধরার অন্যান্য সরঞ্জাম উচ্ছেদের লক্ষ্যে প্রশাসন প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছে। অভিযানের জন্য প্রশাসন ১লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি নৌকা তৈরি করেছে ।
যদিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনের অভিযান সফল না হওয়ার পেছনে অনেক কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে। অভিযানের পূর্বেই সুতি মালিকদের খবর দিয়ে যায় প্রশাসনের অসাধু কর্তাব্যক্তিরা ।
পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি মোল্লা এমরান আলী রানা জানান, চলনবিলে বানার বাঁধ ও সুতি জাল দেওয়ায় সব ধরনের মাছ ও জলজ প্রাণীর জীবনধারণের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে মাছসহ বিভিন্ন জলজ পোকামাকড় বিলুপ্তির পথে। এজন্য জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
এব্যাপারে উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা মোঃ ওমর আলী বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে এ কাজে এলাকাবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রশাসনের পক্ষ হতে মত্স্য নিধনে সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি অভিযান পরিচালনা করে আসছি। এটা অব্যাহত থাকবে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম