কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ জনগণকে যেকোন দুর্যোগ সাহসের সঙ্গে মোকাবেলার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আগামীতে কোন দুর্যোগেই যেন জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সম্ভাব্য সকল ধরনের পদক্ষেপ নেবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য যে, যেকোন দুর্যোগ আসবে সেই দুর্যোগকে আমাদের সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে এবং দুর্যোগ থেকে মানুষকে আমাদের বাঁচাতে হবে। সেইদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, দুর্যোগ আসবে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে এবং যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশের জনগণ সর্বদা প্রস্তুুত থাকবে। ‘আগামীতে কখনও এই বাংলাদেশের মানুষ যেন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যবস্থা অবশ্যই আমরা নেব’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০১৬ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে, দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বিশ্বব্যাপী যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের দুর্যোগ মোকাবেলার পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গ্রহণ করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্যোগ আসবে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে এবং যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশের জনগণ সদাপ্রস্তুুত থাকবে। ঝড় ঝাপটা আসবেই এবং সেটা মোকাবেলা করার মত সক্ষমতা আল্লাহর রহমতে এখন বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ সম্ভু।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের সচিব মো.শাহ কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.রিয়াজ আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাইক্লোন রোয়ানু ক্ষতিগ্রস্থ মো. শহীদুল আলম এবং গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার সাম্প্রতিক বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত মাসুদা বেগম দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হবার নিজস্ব অভিজ্ঞতা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল খেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেশের বিভিন স্থানে নবনির্মিত ১৫৩টি আশ্রয় কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝড়, বন্যা আমাদের দেশে লেগেই থাকে। আমি এটুকু বলব- উত্তরবঙ্গের মঙ্গা আমরা দূর করেছি। এখন নদী ভাঙ্গন ও বন্যা থেকে আমাদের জনগণকে রক্ষা করার জন্য নির্দেশ হচ্ছে-যেসব ঘরবাড়ি করা হচ্ছে তা একটু উঁচু করে নির্মাণ করতে হবে। মানুষের যেন ক্ষতি না হয় সেটা দেখা হবে। প্রত্যেক জেলাতেই আমরা আগাম টিন এবং ত্রাণ সাহায্য জেলা প্রশাসকদের কাছে দিয়ে রেখেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেন কোন আকস্মিক দুর্যোগ এলে তৎক্ষনাৎ তা মোকাবেলায় ব্যবস্থা নিতে পারেন। তাছাড়া এই বন্যা থেকে লোকজনকে রক্ষার জন্য আমরা ভবিষ্যতে পাকা দালান করে দেব। যদিও এখন টিনের ঘরবাড়ি করে দেয়া হচ্ছে- বাংলাদেশে আর একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না-এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত এবং ইনশাল্লাহ আমরা তা করবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের দুর্যোগে তাৎক্ষণিক সাড়া প্রদানের জন্য ৫৫ হাজার ৬২০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক ও ৩২ হাজার নগর স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা হয়েছে। ভূমিকম্প মোকাবেলাতেও ভলান্টিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের স্কাউটস্, বিএনসিসি ও রেডক্রস যুব ভলান্টিয়ারদেরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এবং সর্বদা প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট) বিষয়ে একটি পূর্ণ অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশ দেশ ডেল্টা প্লান-২১০০’ প্রণয়ণের কাজ চলছে। এভাবেই আমরা বন্যা মোকবেলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি,উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় কন্ঠে উচ্চারণ করেন- আমরা বিশ্বাস করি যে, এভাবে কাজ করে গেলে দেশে যেকোন দুর্যোগ এলে তা মোকাবেলা করে জনগণকে আমরা রক্ষা করতে পারব।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/ এম ইসলাম