কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ স্বল্প পরিসরে আঙ্গুর চাষের জন্য বাড়তি জায়গার প্রয়োজন হয় না। বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় যে স্থানে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রৌদ্র থাকে অথচ পানি দাঁড়ায় না এমন জায়গা নির্বাচন করে আঙ্গুর চাষ করা যায়। প্রতি ৭২ বর্গফুটে (৮ x ৯ ফুট) চারটি আঙ্গুর গাছ লাগানো যায়।
যেহেতু আঙ্গুর গাছ ৪০-৫০ বছর বাঁচে সেজন্য লোহা/সিমেন্টের পিলার ও জিআই তার দ্বারা মাচা তৈরী করতে হবে। এজন্য প্রতি একরে খরচ করতে হবে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা। প্রতি একরে ৬০০টি গাছ লাগানো যায়। ২ বছর পর প্রতি গাছে গড়ে কমপক্ষে ৫ কেজী আঙ্গুর ফলবে। ৩ বছর পর প্রতি গাছে ১০ কেজি করে আঙ্গুর উত্পাদিত হলে মোট আঙ্গুরের পরিমাণ হবে বছরে ৬০০০ কেজি বা ৬ টন। বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি কেজি ২০০ টাকা হিসাবে মোট মূল্য দাঁড়াবে ১২ লাখ টাকা।
প্রতি বছর পরিচর্যা করলে একরে ৫০ হাজার টাকাই যথেষ্ট। ৭-৮ বছর পর আরও ভাল ফলন পাওয়া যাবে। তখন একরে ১০-১২ টন ফলন পাওয়া যাবে। তবে আঙ্গুর চাষে প্রুনিং বা অঙ্গ ছাটাই করন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা না জানলে আঙ্গুর ফলানো যাবে না।
আঙ্গুর গাছের নতুন ডালে ফুল ও ফল ধরে বিধায় সময়মত এর অঙ্গ ছাঁটাই না করলে ফুল ও ফল ধরবে না। ছাঁটাইয়ের আগে বা পরে সেচ দেয়ার প্রয়োজন নেই। গাছ রোপণের পর থেকে মাচায় ওঠা পর্যন্ত প্রধান কাণ্ড ছাড়া অন্যসব পার্শ্বশাখা ছেঁটে ফেলতে হবে।
১) ১.৫’ x ১.৫’ গর্ত করে পঁচা জৈব সার ও অর্ধেক মাটির মিশ্রণ দিয়ে গর্ত ভরে তাতে আঙ্গুরের চারাটি রোপন করে শক্ত খুটির সাথে সাপোর্ট দিয়ে বাড়তে দিতে হবে।
২) ৫ ফুট উঁচু শক্ত মাচার (টাল বা বাণ) উপরে ওঠার সুযোগ দিতে হবে। এসময় চারার সব ডাল ছেঁটে দিয়ে শুধুমাত্র ১ টা গাছ মাচার উপর পর্যন্ত উঠতে দিতে হবে।
৩) এবার চারার মাথাটি আবার ছেটে দিতে হবে। কিছুদিনে মধ্যে নতুন শাখা গজালে ২ টা শাখা মাচার উপর দুদিক দিয়ে বেড়ে যেতে দিতে হবে এবং ৩ ফুটের মাঝের পাশের সব ডাল ছেটে দিতে হবে। এ দুটি শাখা এক দিকে ৪ ফিটের বেশি আর বাড়তে দেয়া যাবে না। এর পাশ থেকে যে শাখা বের হবে তা ১৫ ইঞ্চি লম্বা রেখে প্রতি বছর ২ বার শীতের আগে নভেম্বরের ও শীতের পরে মার্চ মাসে ছেটে দিতে হবে। এভাবে ছাটা শাখার পাশ থেক নতুন শাখা গজাবে এবং তাতে আঙ্গুরের ফুল আসবে ও ফল ধরবে। শীত বা গ্রীষ্ম সব সময়ই আমাদের দেশে আঙ্গুর ফলানো যাবে। তবে শীতের আঙ্গুরই ভাল এবং ঝামেলামুক্ত।
৪) বেশি ডাল রাখলে আঙ্গুর কম ধরবে। আঙ্গুরের থোকা থেকও আঙ্গুর পাতলা করে দিতে হবে, এতে আঙ্গুরের আকার বড় হবে এবং পচনরোধ হবে। একজন আঙ্গুর চাষে অভিজ্ঞ কৃষিবিদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সার প্রয়োগ, পানি সেচ, রোগ ও পোকা দমনের ব্যবস্থা করতে হবে। ছবিতে আঙ্গুর চাষ দেখুন।
(খুব শিঘ্রই আঙ্গুর চাষের ওপর বিস্তারিত পোষ্ট দেয়া হবে।)
সুত্রঃ KBD5 Aggro / কৃপ্র/ এম ইসলাম