কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সিলেট, জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় বরবটি জাতীয় শিম (স্থানীয় নাম ‘লাখাই’) চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে প্রায় ৪শ’ পরিবার। বছরজুড়ে সবজি চাষ করে ভালভাবেই চলছে তাদের সংসার। উপজেলার পূর্ব-রুপচেং, হর্নি, পাখিবিল, কামরাঙ্গী, কালিঞ্জি ও বাইরাখেল গ্রামের লোকজন ধানের চেয়ে বরবটি চাষে গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি।
প্রথমে দু’একজন করে শুরু করলেও এখন গ্রামের প্রায় প্রত্যেক কৃষক পরিবার সবজি চাষ শুরু করেছেন। তবে পাহাড়ি এই অঞ্চলে পানি সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। স্থানীয় পুটিখালে একটি স্লুইচ গেইট নির্মাণ হলে এ অঞ্চলে সবজির বাম্পার ফলন হবে বলে জানিয়েছে কৃষক পরিবারগুলো।
স্থানীয় কৃষক জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, গত ৩ বছর ধরে তিনি নিজ উদ্যোগে ৩৩ শতাংশ পৈত্রিক ভূমিতে ধানের পরিবর্তে বিকল্প পদ্ধতিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করে আসছেন। নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে প্রতিবছর সবজির বাম্পার ফলনে তার মুখে সন্তুষ্টির হাসি ফুটেছে। বর্তমানে তিনি এক একর ভুমিতে বরবটি চাষ করেছেন। সপ্তাহে তিনদিন করে তিনি ৬শ হতে ১ হাজার কেজি পর্যন্ত দেশি জাতের বরবটি বাজারে বিক্রি করছেন। এবছর এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩লাখ টাকার বরবটি বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন।
জামাল উদ্দিন বলেন, ধানের চেয়ে সবজি চাষ বেশি লাভ জনক। বাগান করতে বীজ, সার, কীটনাশক সহ মাচা তৈরি করতে প্রায় ৪৫হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে মাচার ওপর নতুন করে উন্নত জাতের শিম গাছ লাগিয়েছেন। ফল ধরতে মাস দেড়েক সময় লাগবে। জামাল উদ্দিন দাবি করেন, পানি সংকটের কারণে তাদের মারাত্মক অসুবিধায় পড়তে হয়। স্থানীয় পুটিখালে স্লুইচ গেট নির্মাণ হলে পানি সংকট দূর হবে জানান তিনি।
কামরাঙ্গী গ্রামের মৃত ফরমান আলীর ছেলে আব্দুস ছাত্তার জানান, প্রায় ২বিঘা জমিতে লাউ, শিম, করলা, লাখাই, টমেটো মিষ্টি কুমড়াসহ নানান রকমের সব্জি চাষ করছেন। বর্তমানে তিনি ৩বিঘা জমিতে বরবটিসহ অন্যান্য সবজি চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ৪লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। এ অঞ্চলে উৎপাদিত সবজি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরবরাহ করা হয় বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, আমরা স্থানীয় কৃষকদের সবজি চাষ সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এতে তারা উপকৃত হচ্ছেন। অনেকে এসএমই সদস্যভূক্ত নন। তাই সরকারিভাবে কোন আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন না। তবে পানির জন্য অনেক জায়গা অনাবদি পড়ে থাকে। পুটিখালে একটি স্লুইচ গেট করা হলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/ এম ইসলাম