কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও ক্ষতি মোকাবেলায় বিশ্ব ব্যাংকের প্রতি ঋণ নয়, অনুদান দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সপ্তাহ ২০১৬’-এর সমাপনী উপলক্ষে আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়নে ‘বাংলাদেশ জলবায়ু ন্যায্যতা ঘোষণা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান হয়। উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোটের (ক্লিন) প্রধান নির্বাহি হাসান মেহেদী।
৭ থেকে ১৮ নভেম্বর মরোক্কোর মারাকেশ শহরে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন কর্মকাঠামো সনদের (ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি) ২২তম জলবায়ু সম্মেলনের (কপ-২২) প্রক্কালে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জলবায়ু তহবিলে বিশ্বব্যাংককে ঋণ নয়, অনুদান দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তণের ফলে গত চার বছরে আমাদের ১৮ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জলবায়ূ মোকাবেলায় বাংলাদেশ তার নিজস্ব অর্থায়নে ৪শ’ মিলিয়ন ডলারের ফান্ড গঠন করেছে। এদিকে যেসব দেশের কারণে বাংলাদেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ১৩০ মিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথেষ্ট সাহস দেখিয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুতে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছেন।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বিগত ৫ বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। তবে জলবায়ূ পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হিসেবে আমরা যেন এমন কিছু না করি যাতে নিজেরাই অভিযুক্ত হই। গঠিত তহবিলের অর্থ প্রয়োজনের তুলনায় কম বলেও মন্তব্য করেন ইফতেখারুজ্জামান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শিল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিদ্যমান প্রতিশ্রুতির নতুন করে বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। যাতে করে ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর তাপমাত্র বৃদ্ধির পরিমাণ গড়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। এ জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলোকে নিঃশর্ত ও মেধাস্বত্বসহ প্রযুক্তি ও অর্থ সহায়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে আইনি ব্যবস্থা ও পরিবীক্ষণ সংস্থাও গড়ে তুলতে হবে।
ক্লিন-এর প্রধান নির্বাহি হাসান মেহেদী বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শিল্পোন্নত দেশসমূহ থেকে সবুজ জলবায়ু তহবিলে প্রতিবছর ১০ হাজার কোটি ডলার প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে সবুজ জলবায়ু তহবিলে ‘ছদ্মবেশী ঋণ’ ও ‘শর্তাধীন সহায়তা’ বন্ধ করার লক্ষ্যে সব অর্থ ইউএনএফসির অনুমোদিত সংস্থার মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জলবায়ু অর্থায়ন ব্যবস্থাপনা, বরাদ্দ প্রদান ও ব্যবহারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ক্লিন-টিআইবি ওয়ার্কিং গ্রুপের আহ্বায়ক এডভোকেট কুদরাত এ খুদা, প্রান্তজনের নির্বাহি পরিচালক এস এম শাহজাদা, নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/ এম ইসলাম