কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ময়মনসিংহে রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছে হাঁড়ি ঝোলাতে শুরু করেছেন গাছিরা। স্বাদের জন্য ভালুকার খেঁজুর রস ও গুড়ের বিশেষ কদর রয়েছে। তবে আবহাওয়া উষ্ণ থাকায় তেমন রস পাওয়া যাচ্ছে না। যে রস পাওয়া যাচ্ছে, তার মিষ্টতাও কম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ সদর, মুক্তাগাছা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল, হালুয়াঘাট, ফুলপুর, ফুলবাড়ীয়া, ত্রিশাল, তারাকান্দা, গফরগাঁও ও ভালুকা উপজেলায় কয়েক লাখ খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ভালুকায় ৬০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এ উপজেলায় কয়েক হাজার গাছি আছেন। ভালুকার কাচিনা ও ডাকাতিয়া ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, পুরো জেলাজুড়ে ভালুকায় খেজুর গুড়ের বিশেষ কদর ও চাহিদা রয়েছে। এ উপজেলায় সারা বছরই খেজুর গুড় বিক্রি হয়। তবে শিল্পায়ন ও ইটভাটায় জ্বালানি মেটাতে পুরো ময়মনসিংহে খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে।
মুক্তাগাছার বাসিন্দা আমছর আলী জানান, অক্টোবরের শেষ দিকে একেকজন গাছি ১৫০-২০০ খেজুর গাছ কেটে ফেলতেন। অথচ এ বছর কেউ ১০-১৫টির বেশি গাছ কাটতে পারেননি। তিনি জানান, খেজুর রস জ্বাল দিয়ে গাঢ় করে তৈরি গুড় খেতে বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় খেজুর রসের দাম বেড়ে চলেছে।
খেজুর গাছের মালিকরা জানান, আবহাওয়া উষ্ণ থাকায় এখন বেশি রস পাওয়া যাচ্ছে না। একটি খেজুর গাছ থেকে দৈনিক পাঁচ-সাত কেজি রস পাওয়া যায়। সপ্তাহে দুদিন গাছ কাটা হয়। একদিন গাছ কাটা হলে তিনদিন রস পাওয়া যায়। শীত না আসায় এখন দুই কেজির বেশি রস পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া রস তেমন মিষ্টি নয়।
ত্রিশালের আবুল মনসুর বলেন, একটা খেজুর গাছ তিনবার কাটার পর তাতে নলি লাগিয়ে রসের জন্য হাঁড়ি পাতা হয়। একটা খেজুর গাছ থেকে দিনে ও রাতে মিলে দুবার রস সংগ্রহ করা যায়। মাঘে রস কমতে শুরু করে। ওই সময়ে রসের ঘনত্ব বাড়ে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, পুষ্টিগুণ ও স্বাদের কারণে শীতকালে খেজুর রসের বেশ চাহিদা থাকে। চাষীদের প্রশিক্ষিত করার মাধ্যমে রস আহরণ বাড়ানো সম্ভব।
এ বিষয়ে ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আজম খান বলেন, আমরা এ অঞ্চলের গাছিদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা করছি। যশোরের খাজুরা গ্রাম থেকে বিশেষজ্ঞ এনে এখানকার গাছিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ময়মনসিংহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আলতাবুর রহমান জানান, লাল মাটিতে খেজুর ভালো হয়। এখানকার খেজুরের রস সুস্বাদু। খেজুর গাছের সংখ্যা কমলেও আমরা খেজুর চাষের জন্য স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধ করছি।
সুত্রঃ বনিক বার্তা/ কৃপ্র/ এম ইসলাম