‘উচ্ছেদের নামে অগ্নিসংযোগ, গাছপালা কাটা, সবজি বাগান ধ্বংস’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সিলেটের জৈন্তাপুরে চারিকাটা ইউনিয়নের সরকারি ভূমি উদ্ধার করা হলেও ভূমিহীন হতদরিদ্র ৪২ পরিবার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে বাউরী টিলা। গ্রামবাসীর অভিযোগ, উচ্ছেদের নামে অগ্নিসংযোগ, গাছপালা কাটা, সবজি বাগান ধ্বংস করে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি করেছে। গত সোমবার উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের বাউরী টিলার লীজ গ্রহীতা এম আহমদ টি অ্যান্ড ল্যান্ড কোম্পানির লালাখাল চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের সহযোগিতায় লিজের ভূমি উদ্ধারে নামে।
ওই সময় শত বছরের ভূমিতে সৃজনশীল বাগান স্থাপন করে বাড়িঘরে বসবাসকারীরা বাধা দিলে প্রশাসন ও গ্রামবাসী মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল, ইউপি সদস্য হাজির আলী, সমাজসেবী সুলতান আহমদ, আলতাফ হোসেন বেলাল ও গণমান্যদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদুল আলমের উপস্থিতিতে ৪২টি পরিবারের দখলে থাকা প্রায় ২৩ একর ভূমি উদ্ধার করে। এরপর এম আহমদ টি অ্যান্ড ল্যান্ড কোম্পানির লালাখাল চা বাগানের সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়। কিন্তু ভূমি উদ্ধারের সময় বাগানের গাছ কেটে ফেলা হয় এবং বসতঘর পুড়িয়ে দিলে ৪২টি পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে।
চারিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল জানান, এখানে ইতোপূর্বে লালাখাল চা বাগান ভূমি বন্দোবস্ত গ্রহণ করে। এক পর্যায়ে তারা রেন্ট পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণ সরকারি ভূমিতে বাগান করে এবং ভূমি বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করেন। বর্তমানে সৃজিত বাগান ধ্বংস হওয়ায় ৪২টি পরিবারে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতি পূরণ দিতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আর্কষণ করছেন। এম আহমদ টি অ্যান্ড ল্যান্ড কোম্পানীর সহকারী ব্যবস্থাপক কামরুজ্জামান জানান, বিরোধপূর্ণ ভূমিটি লালাখাল চা বাগানের একটি অংশ। দীর্ঘদিন এলাকার লোকজন নানাভাবে ভোগদখল করে আসছিল। মৌখিক ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে একাধিকবার তাদেরকে সরে যাওয়ার জন্য বলা হলেও তারা দখল ত্যাগ করেনি।
তাই আদালতের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতেই শান্তিপূর্ণভাবে ভূমিটি এম আহমদ টি অ্যান্ড ল্যান্ড কোম্পানির লালাখাল চা বাগানের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, চারিকাটা ইউনিয়নের প্রায় ৬০ শতাংশ ভূমি সরকারি খাস। তারা স্বাধীনতার আগে থেকে এই ভূমিতে ধান, সবজি, হলুদ, লেবু, সুপারি, ফলদ ও বনজ সম্পদ চাষাবাদ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/ এম ইসলাম