কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সুফল পেতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। নেটওয়ার্ক অন কাইমেট চেঞ্জ, বাংলাদেশ (এনসিসি,বি) ট্রাস্ট, সিডিপি ওং সিপিআরডির যৌথভাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তারা।
জাতীয় প্রেস কাবের লাউঞ্জে গতকাল অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বের ৯৭টি দেশের অনুমোদন নিয়ে গত শুক্রবার থেকে কার্যকরী হওয়া প্যারিস জলবায়ু চুক্তিকে একটি ঐতিহাসিক মাইলস্টোন হিসেবে স্বাগত জানিয়ে এ চুক্তির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সিপিআরডির নির্বাহী প্রধান জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মো: শামছুদ্দোহা এবং সিডিপির নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর হাসান মাসুম। এতে ‘আসন্ন মারাক্কাস সম্মেলনে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হন’ শীর্ষক লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এনসিসি,বির কো-অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান বিজয়।
বক্তারা বলেন, গত ৪ নভেম্বর থেকে বহুল আলোচিত ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’ কার্যকর হয়েছে। গত বছর ১২ ডিসেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সম্পাদিত এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি গত ৫ অক্টোবর কার্যকরী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তপূরণের (কমপক্ষে ৫৫টি দেশ এবং যাদের সম্মিলিত নিগর্মন বৈশ্বিক মোট নির্গমনের কমপক্ষে ৫৫ শতাংশ তাদের অনুমোদন) ৩০ দিন পর থেকে কার্যকরী হয়েছে।
১৯৯৭ সালে কিয়োটো চুক্তি গৃহীত হলেও তা কার্যকরী করার জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড় করতে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কিন্তু এবার বড় দূষণকারী দেশগুলো চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রভৃতি এ চুক্তিকে অনুমোদন দেয়ায় কাক্সিত সময়ের আগেই চুক্তিটিকে কার্যকরী করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ৯৭টি দেশ এ চুক্তিকে অনুমোদন করেছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর এ চুক্তিকে অনুমোদন দিয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, এই প্রথম বিশ্ব নেতারা জীবাশ্ম জ্বালানি যুগের সমাপ্তির সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। এ কারণে এই চুক্তির আওতায় বিশ্ব একটি কার্বনমুক্ত উন্নয়নের দিকে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। তাই বাংলাদেশের মতো দেশের কার্বননির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনে অধিক গুরুত্বারোপ কোনোভাবেই টেকসই হতে পারে না। বরং এখন সময় এসেছে কার্বননির্ভর জ্বালানিকে ধারবাহিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর অধিক গুরুত্ব দেয়ার। এ ছাড়া অভিযোজনের জন্য কোনো ঋণ না নেয়ার যে অঙ্গীকার সরকারের ছিল সে ব্যাপারে আরো কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে প্যারিস চুক্তির আলোকে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। তারা বলেন, গণ-অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে ২০১৮ সালের মধ্যে জাতীয়ভাবে ন্যাশনাল এডাপসান প্লান তৈরির দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ‘গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড’ থেকে যে সরাসরি সহায়তা প্রাপ্তিতে অবিলম্বে ন্যাশনাল ইমপ্লিমেন্টিং এজেন্সি (এনআইএ) গঠনে জাতীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণেরও পরামর্শ দেন তারা।
সুত্রঃ dailynayadiganta.com / কৃপ্র/এম ইসলাম