‘খোলা আকাশের নিচেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নীলফামারীর জলঢাকায় ভবনবিহীন চলছে ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম । অন্যদিকে ৩৯ মাস থেকে জাতীয়করণ তালিকায় শিক্ষকদের নাম গেজেটভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকগণ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ভবন না থাকায় খোলা আকাশের নিচেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস সূত্রে জানা যায়, ২৫ এপ্রিল ২০১৫ এবং তৎপরবর্তী সময়ে এসব ভবনবিহীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভূমিকম্পে ক্ষয়-ক্ষতি সংক্রান্ত তথ্যে উঠে এসেছে। তাতে ৩৫টি ২য় পর্যায়ে তালিকায় প্রাথমিক স্কুলের নাম উঠে এসেছে।
তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ৩৫টি স্কুলের সাথে ১ম পর্যায়ের আরো ৩টি স্কুলকে অন্তর্ভূক্ত করেন ভবনবিহীন তালিকায়। সরেজমিনে উপজেলার পৌর এলাকার আইডিয়াল কলেজপাড়া স্কুলে গেলে দেখা যায়, টিনের ৩টি কক্ষ আর চালা দিয়ে আছে ১টি শ্রেণীকক্ষ। ছোট একটি কক্ষে শিক্ষকরা বসেন। অপর দুটি কক্ষে শিক্ষার্থীরা খুব কষ্ট করে ক্লাশ করে। বর্ষার দিনে দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রতিটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ শিক্ষকদের। এমনি কথা জানালেন এলাকার অভিভাবকগণ।
গাবরোল ডিপেরপাড় দোলাপাড়া স্কুলে গেলে দেখা যায়, ১১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে খোলা আকাশের নিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন মিনা রানী ও সুদিপ্তা। খোলা আকাশে কেন, জানতে চাইলে তারা জানান, ভবন নেই, তাই বাধ্য হয়ে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমাদেরকে এভাবেই ক্লাস নিতে হয়। ভবন না থাকায় শিক্ষার্থী উপস্থিতিও কম।
৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মমতা, পূর্ণিমা, বকুল ও ধীমান জানায়, আমাদের স্কুলের ঘরগুলো ভাঙ্গা। সবসময় পশুপাখির বিষ্টায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাই ক্লাসরুমে আমরা থাকতে পারি না। স্কুলটির চারদিকে ঘুরে দেখা যায়, বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার জন্য নলকূপটি অকেজো। ফাকা অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে স্যানিটারী ল্যাট্রিন। এ অবস্থা উপজেলার দ্বিতীয় পর্যায়ে জাতীয়করণ তালিকায় প্রতিটি স্কুল।
এদিকে দীর্ঘদিনেও জাতীয়করণের তালিকায় শিক্ষকদের নাম গেজেট আকারে প্রকাশ না হওয়ায় নিদারুন কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন শিক্ষকরা এমনটি জানিয়েছেন প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকগণ। আইডিয়াল কলেজপাড়া সপ্রাবি প্রধান শিক্ষিকা শিরিন আক্তার জানান, ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের ভাবনচুর সপ্রাবি মনোয়ারা বেগম বলেন, শিক্ষার গুণগত মান রক্ষায় ভবন জরুরী হয়ে পড়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাজাহান জানান, ৩৮টি স্কুলের ওপর জরিপ করে ভবন নির্মাণের তাগাদা দিয়ে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. রাশেদুল হক প্রধান ভবনবিহীন স্কুলগুলোর ভবন নির্মাণের গুরুত্বারোপ করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/ এম ইসলাম