কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মোরগফুল বাংলার গ্রাম-গঞ্জের আঙিনায় দেখা মেলে হরহামেশাই। উঠোনে, ঘরের পাশে অবলীলাক্রমেই ফুটে থাকে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে সত্যি কোন মোরগ বুঝি বসে আছে। ফুলের আঙ্গিক বিন্যাসটাই এমন। মোরগের মাথার ঝুঁটির আকৃতির কারণে এর নাম মোরগফুল।এশিয়ার নিরক্ষয় অঞ্চল এবং আফ্রিকা আদি নিবাস হলেও বাংলাদেশে মোরগ ফুল একটি জনপ্রিয় ফুল।
অঞ্চল ভেদে কোথাও কোথাও এ ফুলকে মোরগ ঝুঁটি, লালমুর্গা নামেও ডাকা হয়। বর্ষজীবী গাছে ফুল ধরার পূর্ব পর্যন্ত ডাটা সবজি আকৃতির মতো দেখতে এবং পাতা বেশ লম্বা, শিরা মধ্য শিরা স্পষ্ট, অগ্রভাগ সূচালো। গাছ উচ্চতায় ৪-৭ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। গাছের কা- হতে শাখা-প্রশাখা বের হয়। শাখা-প্রশাখা ও কা- নরম। নানান প্রজাতির মোরগফুল রয়েছে। প্রজাতি ভেদে গাছের পাতা, শাখা-প্রশাখা, কা- ও ফুলের রং ভিন্ন হয়। লাল, কমলা, হলুদ, সাদা, সোনালী ও মিশ্ররঙের মোরগফুল দেখতে পাওয়া যায়। ফুল গন্ধহীন, উজ্বল রঙের মোলায়েম পালকের মতো।
গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করে রেখে দেয়ার পর ফুল শুকিয়ে গেলেও এর উজ্বলতা নষ্ট হয় না। ফুল শেষে পরিপক্ক ফুলের মাঝে বীজ হয়, বীজ ডাটা বীজের মতো। পরবর্তী মৌসুমে বংশ বিস্তারের জন্য বীজ সংরক্ষণ করে বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা যায়।
মোরগফুল মূলত হেমন্ত মৌসুমের ফুল। মে মাসে বীজবপন করার পর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে গাছে ফুল ধরে এবং ফুল ফুটন্ত গাছ মার্চ মাস সময় পর্যন্ত টিকে থাকে, তারপর ফুলগাছ আপনা আপনি মারা যায়। রৌদ্রজ্বল পরিবেশ, নিষ্কাসিত ও প্রায় সব ধরনের মাটিতে এ ফুল গাছ জন্মে। বাসা-বাড়ি, অফিস, আদালত, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পার্ক ও অন্যান্য স্থানে এ ফুল গাছ লালন পালন চোখ পড়ে।
সারা গাছে ফুল ফুটে তবে কা-ের ঠিক অগ্রভাগে মোরগ ঝুটি আকৃতির বড় ফুলটি ফুটে, শাখা-প্রশাখার ফুলগুলি আকারে ছোট আকৃতির হয়। মোরগ ফুলের ভেষজ গুনাগুন রয়েছে। অতিরিক্ত প্রস্রাব উপশমে এবং আমাশয় রোগের চিকিৎসায় মোরগফুল ব্যবহার হয়ে থাকে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম