কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে টানা ৪ মাস অব্যাহত নাব্যতা সংকটের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরিগুলোকে এখন চলতে হয় জোয়ার ভাটার পানির সাথে তাল মিলিয়ে। চ্যানেলে পানি না থাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক যানবাহন নিয়ে পদ্মা পারি দিতে পারছে না ফেরিগুলো। তাই গত রোববার থেকে ভিন্ন পন্থায় ট্রাক পারাপার করছে ফেরি সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। এতে পণ্যবাহি ট্রাক পারাপারে কিছুটা সুবিধা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটস্থ এজিএম শাহ খালিদ নেওয়াজ জানান, টানা ৪ মাসের অব্যাহত নাব্যতা সংকটে শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে ফেরি চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। মাঝে মধ্যেই ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে ফেরি। রো রো ফেরি চলাচলের ক্ষেত্রে কম করে হলেও সাড়ে ৬ ফুট পানি দরকার। কিন্তু চ্যানেলে বিভিন্ন অংশে এখন পানি রয়েছে ৬ ফুটের মত। এতে ফেরি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।
পদ্মার তলদেশ ঘেষে ফেরিগুলোকে চলতে হচ্ছে। এতে ফেরির প্রপেলারসহ ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ফেরিগুলোতে পূর্ণলোড দিয়ে চালানো যাচ্ছিল না। ধারণক্ষমতার অনেক কম সংখ্যক গাড়ি নিয়ে ফেরিগুলো ছেড়ে যাচ্ছিল। এতে এক দিকে ঘাটে লেগে যাচ্ছিল যানজট অপরদিকে সরকারের রাজস্ব আয়ও কম হচ্ছিল। তাছাড়া যাত্রী সাধারণের ভোগান্তিতো আছেই।
এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য গত রোববার থেকে ঘাটে অপেক্ষমান পণ্যবাহি ট্রাকগুলোকে ৩টি ডাম্ব ফেরি দিয়ে এখন পারাপার করা হচ্ছে। এতে এখন একটি ডাম্ব ফেরি ৮ থেকে ১০ টি ট্রাক পার করতে পারছে। তিনটি রো রো ফেরিতে কম সংখ্যক বাস ও ছোট হালকা যানবাহন নিয়ে পদ্মা পারি দিচ্ছে। ৫টি মধ্যম আকৃতির কে টাইপ ফেরি ও দুটি ছোট ফেরি দিয়ে হালকা যানবাহন পারাপার করছে। এতে করে আগের থেকে অনেক বেশী ট্রাক পার হতে পারছে।
তিনি আরো জানান, নৌরুটের লৌহজং টানিং পয়েন্ট থেকে চায়না চ্যানেল পর্যন্ত আধা কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি পয়েন্টে পানি সব চেয়ে কম রয়েছে। এ তিনটি পয়েন্টে ফেরি চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। রো রো ফেরিকে চলতে হচ্ছে জোয়ার ভাটার সাথে তাল মিলিয়ে। ডাম্প ফেরি কম পানিতে চলতে পারায় এখন ট্রাক পার করা হচ্ছে ডাম্প ফেরি দিয়ে। তারপরেও মাত্র তিনটি ফেরি দিয়ে আর কতদূর ট্রাক পার করা সম্ভব হবে।
তবে আগের চেয়ে কিছুটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহি যানবাহন পারাপার করতে থাকায় ঘাটে ট্রাকের দীর্ঘ সারি পড়ে যাচ্ছিল। প্রতিদিন দীর্ঘায়িত হচ্ছিল ট্রাকের সারি। এখন এ অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। তবে সামনে পদ্মার পানি আরো কমতে থাকবে, এ অবস্থায় ড্রেজিং করে চ্যানেলগুলোতে পানির গভীরতা না বাড়ালে শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. সুলতান আহমেদ খান জানিয়েছেন, চ্যানেলে তিনটি পয়েন্টে একটু পানি কমই ছিল। তবে তা ড্রেজিং করে শেষের পর্যায়ে এনেছি। শিঘ্রই এ পয়েন্টে ড্রেজিং শেষ হবে। তবে এখন শুষ্ক মৌসুম চলে এসেছে। তাই পানি কমতে থাকবে। সেক্ষেত্রে চ্যানেলেও পানি কমবে। তবে এ অবস্থার উত্তোরণে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং ব্যবস্থাও অব্যাহত থাকবে।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/ এম ইসলাম