কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নরসিংদী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের রোপা আমন ধানের ক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। জেলার পলাশ উপজেলার গজারিয়া ও চরসিন্দুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া শিবপুর, বেলাবো ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বহু ক্ষেতের ধান লালচে রঙ ধারণ করেছে, পাতা শুকিয়ে গেছে। কোনো কোনো জমিতে ধানের শীষ বের হলেও তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে।
পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নোয়াকান্দা এলাকার চাষী আ. রহমান জানান, তিনি এবার প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। কিন্তু এর মধ্যে অর্ধেক জমির ধানই পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক ফলনও পাবেন না বলে ধারণা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ বলেন, এক প্রকারের পোকা রয়েছে, যেগুলোকে পাতা মোড়ানো পোকা বলা হয়। এ পোকা পাতায় বসে এটি বাঁকা করে এর রস খেয়ে ফেলে। ফলে ধান গাছ শুকিয়ে যায়। এছাড়া আরেকটি পোকা হলো বাদামি গাছ ফড়িং। এরা গাছের গোড়ায় বসে গাছের সমস্ত রস খেয়ে ফেলে। এতেও গাছটি শুকিয়ে মারা যায়। মাঠে ফলন শুরু হওয়ায় কৃষকরা পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন না বলে জানান তিনি।
পলাশ উপজেলা কৃষি কর্মকতা মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, এ বছর পোকার আক্রমণের জন্য আবহাওয়া পোকার অনুকূল ছিল। এর প্রতিকারের জন্য যেসব জমিতে এখনো ধান বের হয়নি, সেসব জমিতে ওষুধ প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্য তিনি এ অঞ্চলে ইটভাটা বৃদ্ধি ও তার কালো ধোঁয়াকেও দায়ী করেন।
ফসলের ক্ষতি নিয়ে একই কথা জানান শিবপুর উপজেলার কারারচর গ্রামের কৃষক মো. সাহজাহান মিয়া। তিনি জানান, তার দেড় বিঘা জমির অীধকাংশ ধানই নষ্ট হওয়ার পথে। আর বংশীরদিয়া গ্রামের আবুল কাশেম জানান তার প্রায় চার বিঘা জমির ধান নষ্ট হওয়ার কথা।
এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিকালক মো. লতাফত হোসেন জানান, নরসিংদী জেলার শিবপুর, পলাশ, নরসিংদী সদর, বেলাবো, মনোহরদী ও রায়পুরা উপজেলা এলাকায় বেশ ভালো ধান হয়েছে। এর প্রায় ৯৫ ভাগ জমিতে ধানের শীষ বের হয়েছে। কিছু এলাকায় ধান কাটাও শুরু হয়েছে। তবে পোকার আক্রমণের ফলে প্রাথমিকভাবে যে ক্ষতি আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা আর নেই।
সুত্রঃ http://bonikbarta.com/ কৃপ্র/ এম ইসলাম