কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ দেশ থেকে দিন দিন কমে যাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব তালগাছ গাছ। প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা এবং জীব বৈচিত্রের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি ভেষজ ঔষধ তৈরীতে তাল গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সংরক্ষনের অভাবে তা হারিয়ে যেতে চলছে। পরিবেশ ও কৃষিবিদরা বলছেন, ধীরে বেড়ে উঠা আর দেরিতে ফল প্রদানের কারনে মানুষ এই গাছের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। ঝুঁকছে হাইব্রিড ফলজ গাছের প্রতি। এতে ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের।
আর এমনই সময় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নানা প্রজাতির তাল বীজ সংগ্রহ করে বপণ করা হচ্ছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে। এসব তাল বীজ বপনের মাধ্যমে নাইক্ষ্যংছড়ি জুড়ে থাকবে এক এক জেলার তালের বাগান। এর মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠবে দেশের প্রথম তাল গবেষনা ইনস্টিটিউট। এমনটাই বলছেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান। এই কর্মকর্তার একক উদ্যেগেই তাল গবেষনা ইনস্টিটিউট হতে যাচ্ছে নাইক্ষ্যংছড়িতে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে গত ১৯ অক্টোবর থেকে নাইক্ষ্যংছড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে তাল বীজ বপন। এসব বীজ বপন করা হচ্ছে বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির ও রাস্থার দুই পাশে। আর আগামী ৩ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে দুই লক্ষ তাল বীজ বপন।
তাল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, তাল গাছের শিকড় মাটির গভীরে গিয়ে মাটির পানির স্থর ধরে রাখে। মাটির ক্ষয় ও পাহাড় ধ্বস রোধ করে। বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা করে সুউচ্চ এই ফলজ বৃক্ষ। প্রতিরোধ করে ঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ। তালের শিকড়ে রয়েছে ভেষজ ঔষধী গুন। কাচাঁ তালের শাঁসে আছে আয়রন, ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। তাল গাছ থেকে পিঠা, পায়েস, রস, গুড় ও চিনি তৈরী হয়। এছাড়া বাবুই পাখির আবাসস্থলসহ বিভিন্ন পশু পাখির খাদ্য সম্ভার তাল গাছ। তাল গাছ জীব বৈচিত্র রক্ষায় এক অনন্য অবদান রাখে। এ কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়িবাসি। তারা বলছেন, তাল গাছ সর্ম্পকে অনেকে অবগত ছিলেন না। তারা সন্তুষ্ট দূর্যোগপূর্ন এলাকায় এত তাল গাছ বপন করায়। এই গাছের কারনে বজ্রপাত আর পাহাড় ধ্বস কমবে। এলাকায় হবে তাল গবেষনা ইনস্টিটিউট। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হবে এলাকাবাসি। এছাড়া এটি পুরো বাংলাদেশে একটি উল্লেখযোগ্য স্থানে পরিণত হবে। এছাড়া পর্যটকদের কাছেও আর্কষনীয় স্থান হবে।
সুত্রঃ কৃপ্র/ এম ইসলাম