কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খালের বেশির ভাগই ময়লা-আবর্জনায় ভরা। খালপাড়ে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ঘরবাড়ি, দোকানপাট, রিকশার গ্যারেজ। বারোয়ারি বর্জ্যে পানির প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় খালটি জলাবদ্ধতার কারণ হয়ে উঠেছে। মশার প্রজননক্ষেত্রও এ খাল। খালের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব ঢাকা পানি ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা)। একাধিক জায়গায় ওয়াসার পক্ষ থেকে খাল দখল ও দূষণরোধে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়েছে। কিন্তু কেউই সেসবের তোয়াক্কা করে না। খালে সাঁকো নির্মাণ না করতে ওয়াসার পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবোদয় হাউজিং এলাকার বাজারের পেছনে খালের ওপরে কিছুদূর পরপর চারটি সাঁকো বানানো হয়েছে। এসব সাঁকো দিয়ে লোকজন পার হচ্ছে। খালের অন্য পাড়ে গড়ে ওঠা গ্যারেজ থেকে রিকশা আনা-নেওয়া করা হয় এসব সাঁকো ব্যবহার করে। খালের পাড়েই গড়ে তোলা হয়েছে রিকশা মেরামতের দোকান। ওয়াসার সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির পাশেই খালের ওপর রিকশা মেরামত করার দোকান দিয়েছেন ইয়াসিন মিয়া। তিনি বলেন, দু-তিন বছর ধরেই এখানে দোকান। কেউ কখনো কিছু বলে না। খালে এমন ময়লা সারা বছরই জমে থাকে। এসব ময়লা পানির সঙ্গে ভেসে আসে।
খালে গৃহস্থালি বর্জ্য না ফেলতে ওয়াসার নির্দেশ রয়েছে। দেখা যায়, খালের বাঁধানো পাড়ের পাশে গড়ে ওঠা ঘরবাড়ির সব ময়লা-আবর্জনা খালে ফেলা হচ্ছে। বারোয়ারি বর্জ্যে পানিপ্রবাহ একদমই বন্ধ। ময়লা-আবর্জনায় ভরাট প্রায়। বর্জ্য জমে তার ওপর হাঁটাও যায়। কয়েকটি শিশু তার ওপর বসে খেলছে। মাটি জমে সেখানে গাছপালা গজিয়েছে।
নবোদয় হাউজিং সোসাইটির বাসিন্দা নিয়ামত আলী বলেন, ‘১৫-২০ বছর আগেও খালটিতে স্রোত ছিল। চোখের সামনে খালটি মরতে দেখলাম। ময়লার দুর্গন্ধে এখন বাড়ির দোতলা-তিনতলা পর্যন্ত টেকা যায় না। পরিষ্কার না করায় প্রচুর মশা হয়।’মোহাম্মদিয়া হাউজিংয়ের লোহার গেট এলাকায় মোহাম্মদী হোমসের বিপরীতে খালের (তিন খালের মোড়) অবস্থা বেশি খারাপ। সেখানে ওয়াসার সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির বাঁ পাশে খাল ভরাট করে রিকশাস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। লোহার গেট অংশের পাশে টিনের বেড়া দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে গরুর খামার। খামারের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে খালে।
গত বছরের নভেম্বর মাসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ১৩টি খালের বেহাল অবস্থার কারণে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা হয় বলে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। তালিকার ১৩টি খালের মধ্যে অন্যতম ছিল রামচন্দ্রপুর খাল। এ বছরের এপ্রিল মাসে ওয়াসা রামচন্দ্রপুর খালের ভাসমান ময়লা অপসারণ করে।
এ বিষয়ে ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের একজন প্রকৌশলী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘বর্ষার শুরুতে খালগুলো পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু এটি দু-তিন মাসও স্থায়ী হয় না। স্থায়ী হতে হলে বাসাবাড়ির ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে। কোথায় কোথায় অবৈধ স্থাপনা হয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সুত্রঃ প্রথম আলো / কৃপ্র/ এম ইসলাম