কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পানি কমার সাথে সাথে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যমুনা নদীতে চলছে তীব্র নদী ভাঙন। গত এক মাসের ব্যবধানে চারটি গ্রামের শতাধিক বসত বাড়ি, ২২টি দোকান পাট, ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা অন্যের বাড়িতে এবং ওয়াবদা বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভাঙনরোধে নেয়া হয়নি কোন কার্যকর পদক্ষেপ। এছাড়া দেয়া হয়নি ত্রাণ সহায়তা অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা ভাঙনরোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। খবর নয়া দিগন্ত অনলাইনের।
সরেজমিন জানা গেছে, চৌহালী উপজেলার দক্ষিাণাঞ্চলের খাষপুখুরিয়া থেকে সীমান্তবর্তী পাথরাইল পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকার বাঘুটিয়াপূর্ব, চরছলিমাবাদ, পাথরাইল পূর্ব পাড়া, খাষকপুখুরিয়া পশ্চিম ও উমারপুর ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী বিনানই, হাপানিয়া ও হাটাইল গ্রামে অসময়ে নতুন করে যমুনা নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চরসলিমাবাদ বাজার, বাঘুটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরছলিমাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরছলিমাবাদ মুসলিমিয়া দাখিল মাদরাসা, চৌবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাথরাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাপানিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরছলিমাবাদ ও বাঘুটিয়া কবরস্থানসহ শতাধিক কাচা-পাকা ঘর বাড়ি, তাঁতকারখানা, বাজার, কাঠ ও ফলদ বাগানসহ বহু আবাদি জমি গত এক মাসের ব্যবধানে যমুনা নদী গ্রাস করেছে।
এসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্থরা আতœীয়-স্বজনদের বাড়িতে উঠেছে। এছাড়া অনেকেই ওয়াপদা বাঁধে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের জন্য পৌছায়নি জরুরী ত্রাণ সহায়তা এবং ভাঙনরোধে নেয়া হয়নি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ বলে অভিযোগ করেছেন বাঘুটিয়ার আলমাস উদ্দিন, জরিনা বেওয়া, জহির প্রাং ও সোলায়মান সহ অনেকেই।
এদিকে ভাঙন অব্যাহত থাকলে চৌবাড়িয়া কারিগরি কলেজ, পয়লা দাখিল মাদরাসা, চরসলিমাবাদ দাখিল মাদরাসা, বিনানই বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাপানিয়া ও হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কবরস্থান, বুতের মোড় বাজার ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব:) আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাড়িসহ চারটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবার আশংঙ্ক রয়েছে। এছাড়া অসময়ের ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসির মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতংক বিরাজ করছে।
এব্যাপারে বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাহহার সিদ্দীকি বলেন, উপজেলা সদর এলাকা রক্ষায় নির্মানাধীন তীর রক্ষা বাঁধের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের পাথরাইল পর্যন্ত যমুনা তীরবর্তী এলাকা ভাঙ্গন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে দক্ষিণাঞ্চল মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। এছাড়া নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ভিজিডি ও ভিজিএফ বিতরণ করা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য সরকারী ভাবে অতিরিক্ত ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দ এবং ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান তিনি।
এবিষয়ে চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব:) আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, নদী ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে। তারা দক্ষিণাঞ্চল রক্ষায় ৮ কোটি টাকার কাজের একটি আশ্বাস দিয়েছেন।
চৌহালী নির্বাহী কর্মকর্তা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ সাইফুল হাসান বলেন, বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি চৌহালীতে। তবে নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম