বিজ্ঞানী ড. কে, এম, খালেকুজ্জামানঃ টমেটোর নাবী ধ্বসা রোগ ফাইটপথোরা ইনফেস্ট্যান্স নামক ছত্রাকের আক্রমনে হয়ে থাকে। নিম্ন তাপমাত্রা (১২-১৫০ সেঃ), উচ্চ আর্দ্রতা (৯৬% এর উপরে) ও মেঘাচ্ছন্ন স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বাতাস ও সেচের মাধ্যমে এ রোগ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
রোগের লক্ষনঃ প্রাথমিক অবস্থায় পাতার উপর সবুজ কালো, পানিভেজা আঁকাবাঁকা দাগ পড়ে। আর্দ্র আবহাওয়ায় এ সমস্ত দাগ সংখ্যায় ও আকারে দ্রত বাড়তে থাকে এবং বাদামী থেকে কালচে রং ধারণ করে। মাঝে মাঝে পাতার নীচের দিকে সাদা সাদা ছত্রাক জম্মে। আক্রান্ত পাতা পঁচে যায়। পাতা হতে কাণ্ড এবং কান্ড হতে ফলে রোগ ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে ফলের উপরিভাগে ধূসর সবুজ, পানি ভেজা দাগের আবির্ভাব হয়। ক্রমশঃ ঐ দাগ বেড়ে ফলের প্রায় অর্ধাংশ জুড়ে ফেলে এবং আক্রান্ত অংশ বাদামী হয়ে যায়। রোগের লক্ষন দেখার পর নিম্ন তাপমাত্রা, আর্দ্র ও কুয়াশাচ্ছন্ন স্যাতসেতে আবহাওয়া বিরাজ করলে ৩-৪ দিনের মধ্যে গাছ ঝলসে যায় ও দ্রুত মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিকারঃ
১) ফসল উঠার পর জমির আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশসমূহ একত্র করে পুড়ে ফেলতে হবে।
২) রোগমুক্ত এলাকা হতে সুস্থ বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
৩) আলু ও টমেটো গাছ পাশাপাশি লাগান উচিৎ নয় এবং আলু ও টমেটো ছাড়া জমিতে শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে।
৪) রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে।
৫) নিম্ন তাপমাত্রা, উচ্চ আর্দ্রতা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া মাত্র মেলোডি ডিও প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ও সিকিউর প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে একত্রে মিশিয়ে গাছের পাতার উপরে ও নীচে ভিজিয়ে ৭ দিন পর পর কমপক্ষে ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
বিজ্ঞানী ড. কে, এম, খালেকুজ্জামান, উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব), মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, শিবগঞ্জ, বগুড়া।
কৃপ্র/এম ইসলাম