কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজশাহীতে রেশম সেক্টর পুনরুজ্জীবনের জন্য কাজ করছে তৃণমূল মানুষ। স্থানীয়ভাবে সুতা উৎপাদন করে রেশম শিল্পকে সফল করার জন্য তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা । জেলার বাঘা ও চারঘাট উপজেলার বেশির ভাগ গ্রামবাসী বাংলাদেম সেরিকালচার উন্নয়ন বোর্ডের (বিএসডিবি) সহযোগিতায় তুঁত গাছ ও গুটিপোকা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তারা এখন তাদের নিয়মিত কাজ কর্মের পাশাপাশি বাড়ির আশেপাশে রেশম চাষে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছেন।
আঞ্চলিক সেরিকালচার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রেশম চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদেরকে গুটিপোকা প্রদানসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। মীরগঞ্জ এলাকায় একটি আদর্শ রেশম পল্লী গড়ে তোলা হয়েছে। কৃষকরা ২৭০ টাকা কেজি দরে গুটিপোকা বিক্রি করছেন। বিএসডিবি বিভিন্ন পর্যায়ে উৎপাদনে উদ্যোক্তা উন্নয়নের মাধ্যমে রেশম চাষ ও রেশম শিল্প বিকাশে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
বিএসডিবি’র সদস্য (সম্প্রসারণ) সিরাজুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘এক্সটেনশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট অব সেরিকালচার ইন পাবলিক এন্ড প্রাইভেট সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় উপযোগী এলাকায় ২৩টি আদর্শ সেরিকালচার পল্লী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা যাতে উচ্চ ফলনশীল তুঁতগাছ বাগান ও উন্নতমানের রেশমের গুটি উৎপাদনে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন সেজন্য প্রকল্প থেকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব গ্রাম অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের উত্তম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জনগণও ক্রমশঃ আয়বর্ধক এই প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
প্রকৃতিগতভাবেই সেরিকালচার ও রেশম শিল্প পরিবারভিত্তিক শ্রম সংক্রান্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রম, যার মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। তিনি জানান, এই শিল্পের সঙ্গে ছয় লাখেরও বেশি মানুষ জড়িত, যার মধ্যে এক লাখ রেশমের গুটি উৎপাদন এবং বাকিরা রেশম সুতা তৈরি, স্পিনিং, ওয়েরিং, ডায়িং, প্রিন্টিং, ফিনিশিং ও ব্যবসা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই শিল্পের বহুমুখী কার্যক্রম প্রান্তিক কৃষক, ভূমিহীন দরিদ্র মানুষ, গ্রামীণ কারিগর, শহরের রেশম বস্ত্র তৈরির শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপক অবদান রাখছে।
তিনি জানান, বর্তমানে বেসরকারি খাতে প্রায় ৮০টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি রেশম কারখানা বার্ষিক ২৫ দশমিক ৫০ মিলিয়ন মিটার কাপড় উৎপাদন করছে। এই প্রকল্পের আওতায় ছয় লাখের মতো তুঁত গাছ রয়েছে এবং চারা রোপণ ও পরিচর্যার কাজে তিন হাজার ব্যক্তি জড়িত। এতে ২৪ হাজার কেজি রেশম গুটির বীজ উৎপাদন হবে। বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী জানান, স্থানীয় সুতার ব্যাপক উৎপাদন রেশম বস্ত্রের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও রেশমের লুপ্ত গৌরব।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/ এম ইসলাম /