কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ অধিক ফলন ও লাভের জন্য এলাকা ভিত্তিক চাষ উপযোগী সঠিক জাত নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভাল বংশ ও মা ছাড়া যেমন ভাল সমন্বিত আশা করা যায় না তেমনি ভাল জাতের ভাল বীজ ছাড়া উত্তম ফসল পাওয়া যায় না। নানা জাতের বীজের মধ্যে তাই সঠিক জাতটি নির্বাচন করে চাষ করা একজন কৃষকের প্রাথমিক দায়িত্ব। বর্তমানে বাংলাদেশে হাইব্রিড, উফশী ও নানা ধরনের আধুনিক জাতের ধান চাষ করা হচ্ছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লক্ষ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধানের আবাদ হচ্ছে। তবে কৃষকদের কাছে সব জাতের গ্রহণযোগ্যতা সমান নয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) থেকে উদ্ভাবিত এ পর্যন্ত ৭২টি ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৮টি উফশী (ইনব্রিড) ও ৪টি হাইব্রিড জাত রয়েছে। বিনা থেকে উদ্ভাবিত জাতসমূহ যেমন বিনাশাইল, বিনাধান ৫, বিনাধান ৬ ও বিনাধান ৭ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভাবিত দু’টি জাত বিএইউ ৬৩ (ভরসা) এবং বিএ ইউ ২ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নীচে এ দেশে ব্রি উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে তুলে ধরা হল ।
বিআর ১ : বোরো ও আউশ মৌসুমে আবাদযোগ্য এ ধানের জনপ্রিয় নাম চান্দিনা । কোন কোন অঞ্চলে এ ধান ৫৩২ আবার কোথাও কেবল ৭৬ নামে পরিচিত । চান্দিনা একটি আগাম জাত ।
বিআর ২ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম মালা । এ ধানের মুড়ি খুব ভাল হয়। মালা বোরো এবং রোপা আউশের একটি জাত।
বিআর ৩ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম বিপ্লব। এটি নাবী জাত হলেও বোরো মৌসুমে ফলনের জন্য সুখ্যাত। জাত রোপা আউস এবং রোপা আমন মৌসুমেও ভাল ফলন দেয়।
বিআর ৪ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম ব্রিশাইল। এটি একটি আলোক-সংবেদনশীল জাত। তাই কেবল রোপা আমন মৌসুমে চাষাবাদ করার জন্য উপযোগী। এ ধানের বীজ বপনের সবচেয়ে ভাল সময় হলো আষাঢ় মাস। এ সময় বীজ বপন করলে শ্রাবণের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত সময়ে চারা রোপণ করা যায়। কার্তিকের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহে ফুল ফোটে। অগ্রহায়ণের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে ধান পাকে।
বিআর ৫ : আমন মৌসুমের এ ধানের জনপ্রিয়তা নাম দুলাভোগ। এর চালের কালিজিরা চালের মতো সুগন্ধ আছে বলে পোলাও এবং পায়েশ তৈরির জন্য খুবই উপোযোগী। এটি আলোক- সংবেদনশীল, তাই এর চাষাবাদ রোপা আমন মৌসুমের জন্য নির্ধারিত।
বিআর ৬ : বোরো ও আউশ মৌসুমের জাত। ব্রি এ ধানটি ইরি থেকে সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আশানুরুপ ফলন পাওয়ায় বিআর ৬ নামে অনুমোদন পায়। এটি একটি আগাম জাত।
বিআর ৭ : ঝড়-ঝঞ্ঝা কম হয় এমন অঞ্চলে এ ধান রোপা আউশ ও বোরো মৌসুমের জন্য উপযোগী। কারণ ধান বেশি পেকে গেলে ঝড়ে পড়ার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই এ ধান পাকার সাথে সাথে কর্তন করতে হবে। এর চালের আকার প্রায় বাসমতির মতো, তবে এতে সুগন্ধি নেই।
বিআর ৮ : এ জাতের জনপ্রিয় নাম আশা। বোরো এবং আউশ মৌসুমের এ জাত ধান শীষের সাথে শক্তভাব লেগে থাকে। তাই ঝড়-ঝঞ্ঝা এবং শিলা বৃষ্টি-প্রবণ এলাকার জন্য এ ধান বিশেষ উপযোগী।
বিআর ৯ : বোরো ও আউশ মৌসুমে চাষের উপযোগী। বিআর ৯ এর জনপ্রিয় নাম সুফলা। এ জাতে ধান শীষের সাথে শক্তভাবে লেগে থাকে তবে আশা ধানের চেয়ে মজবুতি কিছু কম। এ জাত শিলাবৃষ্টি-প্রবণ এলাকার জন্য খুবই উপযোগী।
বিআর ১০: এ ধানের জনপ্রিয় নাম প্রগতি। এজাতটি সহজে চেনা যায। কারণ ফুল ফোটার সময় শীষগুলো ডিগপাতার নিচে থাকে এবং ডিগপাতার শেষ প্রান- হঠাৎ করেই সুচালো। প্রগতিকে রোপা আমনের নাবী জাতের তালিকায় ফেলা যায়। জাতটিতে আলোক-সংবেদনশীলতা আছে। এ কারণে রোপণের জন্য ৪০-৫০ দিনের চারা ব্যবহার করা যায়। তখন চারা বেশ লম্বা হয় এবং হাঁটু পানিতে সহজেই রোপণ করা যায়। এ সব সুবিধার জন্য খুলনার লবণাক্ত এলাকায় রোপা আমন মৌসুমে জাতটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ জাতের লবণাক্ত সহনশীলতা নেই, কিন’ রোপা আমনে লবণাক্ত অঞ্চলে ক্ষেতে ২০-৩০ সেমি: গভীর পানি থাকায় লবণাক্ত মাত্রা ধানের ক্ষতিকারক পর্যায় (৪ডিএস/মিটার) এর নিচে থাকে। স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতার জন্য এ জাত জ্যৈষ্ঠের ২০-২৫ তারিখে বপন করলে কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে ফসল কর্তন করা যায়। ফলে ঐ জমিতে সময় মতো গম, ডাল ও তেল ফসল আবাদ করা যায়।
বিআর ১১ : এধানের জনপ্রিয় নাম মুক্তা। এ ধানের ফুল ফোটার সময় শীষ ডিগপাতার উপরে থাকে এবং সহজেই দৃষ্টি কাড়ে। আমন মৌসুমের এ জাতটি সারা দেশে জনপ্রিয়। মুক্তা ধান স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতাবিশিষ্ট। স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতার জন্য এ জাত জ্যৈষ্ঠের ২০-২৫ তারিখে বপন করলে কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে ফসল কাটা যায়; ফলে ঐ জমিতে সময়মতো গম, ডাল ও তেল ফসল আবাদ করা যায়।
বিআর ১২ : বোরো ও আউশ মৌসুমের এ ধানের জনপ্রিয় নাম ময়না। এ ধানের গাছের নিচের অংশে বেগুনী রঙ দেখে জাতটি সহজে চেনা যায়। এ জাতটি দেশের যে সকল অঞ্চলে আগাম রোপা আউশ হয় ঐ সব এলাকার জন্য খুবই ভাল জাত।
বিআর ১৪ : এর জনপ্রিয় নাম গাজী। বোরো ও আউশ মৌসুমের এ জাত ছড়া বের হবার পর ডিগপাতা কিছুটা হেলে যায়; ফলে শীষ উপরে দেখা যায় এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ছড়ার উপরি ভাগের ধানে হেলে শুঙ আছে। ধানের গাছ বেশ উঁচু এবং খুব মজবুত, তাই ধান পাকার সময় মাঠ কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায় না। এ জন্যে দেশের বিল অঞ্চলে বোরো মৌসুমে এটি খুবই জনপ্রিয়।
বিআর ১৫ : বোরো ও আউশ মৌসুমে চাষাবাদের জন্য বিআর ১৫ নামে অনুমোদন লাভ করে। এর জনপ্রিয় নাম মোহিনী । এ জাতের চাল প্রায় স্থানীয় শানীয় ধানের মতো, কিন’ এটি নাবী জাত।
বিআর ১৬ : বোরো ও আউশ মৌসুমের এ ধানের জনপ্রিয় নাম শাহীবালাম। এ ধানের চাল পুরানো আমলের বালাম সমমানের এবং বর্তমানে মুড়ি তৈরি জন্য খ্যাতি লাভ করেছে।
বিআর ১৭ : ব্রি এ জাতটিকে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করে বোরো মৌসুমে চাষের জন্য এ জাতটি অনুমোদন লাভ করে। এ ধানের জনপ্রিয় নাম হাসি । এ জাতের গাছ বেশ উঁচু ও কান্ড শক্ত। ফুল ফোটার সময় এ ধানের শীষগুলো ডিগপাতার উপরে থাকে বলে সহজেই দৃষ্টি অকর্ষণ করে এবং জাতটির জীবনকাল মাধ্যম মেয়াদী।
বিআর ১৮ : ব্রি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করে। বোরো ও মৌসুমে এ জাতটি বিআর ১৮ নামে অনুমোদন লাভ করে। এ ধানের জনপ্রিয় নাম শাহজালাল। এ জাতের গাছ বেশ উঁচু ও কান্ড মজবুত এবং নাবী।
বিআর ১৯ : জাতটি ধান পরীক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্রি-তে আসে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এটি হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকার উপযোগী বলে চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করা হয। বোরো মৌসুমের এ জাতটি বিআর ১৯ নামে অনুমোদন লাভ করে। এ ধানের জনপ্রিয় নাম মঙ্গল। এর ডিগপাতা ছোট এবং কান্ডের সাথে আড়াআড়িভাবে অবস্থান করে। ফুল ফোটার সময় শীষ উপরে থাকে এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ জাতের গাছ বেশ উঁচু এবং ধান পাকা পর্যন- খাড়া থাকে এবং নাবী।
বিআর ২০ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম নিজামী। এ জাতের ধানে অনেক সময় দাগ দেখা যায় । জাতটি ছিটিয়ে, লাইন করে এবং ডিবলিং করা যায়। বোনা আউশের এ জাতটি দেশের বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে, বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহ জেলার জন্য উপযোগী।
বিআর ২১ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম নিয়ামত। জাতটি ছিটিয়ে,লাইন করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে বোনা যেতে পারে। বোনা আউশের এ জাতটি দেশের বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে, বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহ জেলার জন্য উপযোগী।
বিআর ২২ : আমন মৌসুমের উপযোগী। এ ধানের নাম কিরণ। এটি একটি আলোক সংবেদনশীল নাবী জাত। ঠিক নাইজারশইলের মতো। এর চাল আর নাইজারশাইলের মধ্যে পার্থক্য নেই বললেই চলে; আবার ফলনও হয় দ্বিগুণ। দেশের বন্যাপ্রবণ এলাকায় বন্যা পরবর্তী সময়ে যে জমিতে যেভাবে নাইজারশাইলের চারা রোপণ করা হয় সে সময়ে ওই জমিতে একই নিয়মে কিরণ রোপণ করা যাবে। কিরণে প্রতি হেক্টর ১ টন ফলনও বেশি পাওয়া যাবে। রোপণের পর কিছু পরিচর্যা, যেমন জমিতে পানি সংরক্ষণ ও পরিমাণ মতো নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করতে হয়। জোয়ার-ভাটা অঞ্চলে কিরণ ধানের ৪০-৫০ দিনের চারা ১-১৫ আশ্বিন পর্যন- রোপণ করা যায়। ১৫ আশ্বিনের পর এ ধান রোপণ করা উচিত নয়। প্রচলিত কুমড়াগইর, সাদামোটা ইত্যাদি ধানের সাথেই ধান কাটা যায় এবং প্রতি হেক্টরে কমপক্ষে ১ টন ফলন বেশি পাওয়া যায়।
বিআর ২৩ : এ ধানের জনপ্রিয় নাম দিশারী। এ ধানের চারা ও গাছ বেশ উঁচু ও কান্ড খুবই শক্ত। এটি একটি আলোক-সংবেদনশীল নাবী জাত। তাছাড়া এ ধান কিছুটা লবনাক্ততা সহনশীল। এসব গুণাবলীর জন্য জাতটি খুলনা ও বাগেরহাট অঞ্চলে রোপা আমনে খুবই জনপ্রিয়। বিআর ২২ ধানের মতোই বিআর ২৩ বন্যা-পরবর্তী এবং জোয়ার ভাটা অঞ্চলে নাবী রোপা আমন হিসেবে চাষাবাদের জন্য উপযোগী।
বিআর ২৪ : আউশ মৌসুমের উপযোগী। এ ধানের জনপ্রিয় নাম রহমত। এ জাতের গাছ খুবই শক্ত। ফুল ফোটার সময় শীষ ডিগপাতার উপর থাকে এবং সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ ধানের চাল খুবই সুন্দর। জাতটি ছিটিয়ে,লাইন করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে বোনা যায়। রহমত কেবল বৃষ্টিবহুল এলাকার জন্য উপযোগী।
বিআর ২৫ : আমন মৌসুমের উপযোগী এ ধানের জনপ্রিয় নাম নয়াপাজাম। এ ধানের রং ও আকৃতি এবং চালের আকার একদম পাজামের মতো। উপরন্তু এ ধান ৫-৭ দিন আগাম, গাছ অনেক মজবুত এবং ফলন দেয় বেশি। এ ধানের জীবন কাল মধ্য মমেয়াদী। তাই আষাঢ়ের শুরুতে বপন করলে কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে কেটে রবি ফসল চাষাবাদ করা যায়।
বিআর ২৬ : বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এটিকে রোপা আউশের জাত হিসেবে চুড়ান্ত ভাবে নির্বচান করা হয়। এ ধানের জনপ্রিয় নাম শ্রাবণী। এটি আগাম জাত। এর কান্ড শক্ত এবং ফুল ফোটার সময় শীষ ডিগপাতার উপর থাকে। তাই সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এর চাল বালামের অনুরূপ। কিন্তু ভাত নরম ও কিছুটা আঠালো। ধান শুকানোর পর দুই তিন মাস সংরক্ষণ করলে আঠালো ভাব অনেকাংশে দুরীভুত হয় ।
ব্রি ধান ২৭ : ধানের গোড়ার দিকে পাতার খোল কিছুটা বেগুনি রঙের এবং ধানের মাথায় বেগুনি রঙের ফোঁটা আছে। ধান পাকার সাথে সাথে এ ফোঁটা ঝরে পড়ে যায়। এ জাতের গাছ উঁচু হলেও কিছুটা ঢলে পড়া প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। স্থানীয় জাত গুলো যখন ধান পাকার আগেই ঢলে পড়ে যায় তখন এ ধান মজবুতির সাথে দাঁড়িয়ে থাকে। বরিশাল পটুয়াখালী জেলার অলবণাক্ত জেয়ার-ভাটা কবলিত জমিতে বোনা ও রোপা আউশ হিসেবে চাষাবাদের জন্য জাতটি খুবই উপযোগী।
ব্রি ধান ২৮ : এটি বোরো মৌসুমের আগাম জাত হিসেবে অনুমোদন লাভ করে। এ ধানের ডিগপাতা হেলে যায় এবং শীষ উপরে থাকে; ফলনেও ভাল তাই এর জনপ্রিয়তা ঘরে ঘরে।
ব্রি ধান ২৯ : এটা বোরো মৌসুমের আগাম নাবী জাতের ধান। এর সার গ্রহণ ক্ষমতা যেমন বেশি তেমনে কান্ড মজবুত আর ফলনের পরিমাণ সর্বোচ্চ গুনে ও মানে ব্রি ধান ২৯ সকল আধুনিক ধানের সেরা।
ব্রি ধান ৩০ : আমন মৌসুমের এ জাতের ধানের আকার, রঙ, গাছের এবং জীবনকাল প্রায় বিআর-১০ এর মতো। পার্থক্য শুধু ডিগপাতায় যা শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ক্রমশ সুচালু। এর স্বল্প আলোক সংবেদনশীলতা আছে। তাই এর আবাদ পদ্ধতি বিআর ১০ এর অনুরূপ।
ব্রি ধান ৩১ : আমন মৌসুমের এ ধানে মৃদু আলোক-সংবেদনশীলতা থাকলেও বিআর ১১ এর চেয়ে ৫-৬ দিন আগাম। ধানের রঙ ও আকৃতি বিআর ১১ এর মতোই, তবে আকারে একটু বড়। শীষ দেখতে আকর্ষণীয়, ধানের গাঁথুনি ঘন এবং শীষের গোড়ায় কিছু চিটা হয়। এ ধানের চাষাবাদ বিআর ১০ বা বিআর ১১ এর অনুরূপ।
ব্রিধান ৩২ : জাতটি আলোক-সংবেদনশীল নয় বলে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসের মধ্যে যখনই বীজ বপন করা হোক না কেন এর জীবনকাল ১৩০ দিন। এ সুবাদে জমিভেদে এ জাতের বপন-রোপণ নির্ধারণ করে অতি সহজেই রবি ফসল, যেমন গম, সরিষা ইত্যাদি সঠিক সময়ে বপন করা যায়। এ ধান গাছের মজবুতি কিছুটা কম বলে ঢলে পড়ার প্রবণতা দেখা যায়। সঠিক মাত্রায় সার ব্যবহারে তা অনেকটা প্রতিরোধ করা যায়। আবার ভাদ্রেও প্রথম সপ্তাহে রোপণ করলে গাছের উচ্চতা কমে এবং কান্ডের মজবুতি বাড়ে।
ব্রি ধান ৩৩ : এটি রোপা আমনের সবচাইতে আগাম জাত এবং কোন আলোক সংবেদনশীলতা নেই এ জন্য ব্রি ধান-৩২ এর মতো এ ধানের চাষাবাদের পর অনায়াসেই সব রকম রবি ফসল করা যায়। এর কান্ড মজবুত। গাছের পাতা প্রচলিত জাতের চেয়ে সামান্য চওড়া এবং ডিগপাতায় আগার দিক থেকে ২-৩ সেন্টিমিটার নিচে কোঁচকানো ভাঁজ আছে। ধানের খোসায় ভাঁজে ভাঁজে হালকা বাদামি রঙ আছে। এ জাতটি আগাম তাই এর বীজ বপনের তারিখটি তালিকা ২ দেখে নিতে হবে। আগাম বপন করলে আগাম পাকবে। তবে তাতে ইঁদুর, পোকা, বৃষ্টি ইত্যাদিতে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকবে।
ব্রি ধান ৩৪ : এটি একটি সুগন্ধি জাত। এ ধান কালিজিরা ধানের মতো ছোট এবং ঘ্রাণ কালিজিরার কাছাকাছি। আমন মৌসুমের এ ধানের চাল পোলাও তৈরির জন্য খুবই উপযোগী। এ ধানে আলোক সংবেদনশীলতা আছে। গাছ বেশ দুর্বল। তাই ফলন বৃদ্ধিও জন্য এর বপন কিছুটা পরে অর্থাৎ শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে করা উচিত।
ব্রি ধান ৩৫ : এটি বাদামি গাছফড়িং প্রতিরোধশীল জাত হিসেবে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে।
ব্রি ধান ৩৬ : এটি ঠান্ডা সহিষ্ণু বোর ধানের জাত হিসেবে নির্বাচন করা হয় এবং ব্রি ধান ৩৬ নামে অনুমোদন লাভ করে। ব্রি ধান-২৮ এর মতোই এটি একটি আগাম জাত এবং চাল বালামের মতো।
ব্রি ধান ৩৭ : রোপা আমন মৌসুমের এ ধানের গাছ কাটারিভোগের চেয়ে অনেক মজবুত, কিন’ ৫-৭ দিন নাবী। ধানের রঙ, চালের আকার ও ঘ্রাণ ঠিক কাটারিভোগের অনুরূপ।এ ধানের শীষ দেখতে আকর্ষণীয় এবং শীষে ধানের গাঁথুনি বেশ ঘন। ধানের শেষপ্রান- একটু বাঁকা এবং সুচালো থেকে ছোট শুঙ দেখা যায়। এর ভাত ও পোলাও কাটারিভোগের সমতুল্য। জাতটি আলোক সংবেদনশীল। অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করতে শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে বীজ বপন করা এবং প্রয়োজনে সম্পূরক সেচ দিতে হবে।
ব্রিধান ৩৮ : এর গাছ বাসমতি (ডি)-এর চেয়ে অনেক মজবুত। ধানের রঙ ও শুঙ সোনালী সাদা। ব্রিধান ৩৮ এর চাল ও ঘ্রাণ বাসমতি (ডি) এর অনুরূপ। ভাত ও পোলাও দুটোই খুব সুন্দর। এ ধানের চালে সুগন্ধি আছে। রোপা আমনের এ জাতটি আলোক সংবেদনশীল। অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করতে শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে বীজ বপন করা এবং প্রয়োজনে সম্পূরক সেচ দিতে হবে।
ব্রিধান ৩৯ : রোপা আমন মৌসুমের উপযোগী এ ধানের কান্ড মজবুত, তাই ঢলে পড়ে না। প্রচলিত জাতের চেয়ে এর ডিগপাতা একটু চওড়া এবং খাড়া। ব্রিধান ৩২ ও ব্রি ধান ৩৩ এর মতো এ জাতের বীজ বপন ও রোপণের তারিখ নির্ধারণ করে পরবর্তী রবি ফসল করা যায়। তবে এ জাতের ধান কোন ক্রমেই শ্রাবণ মাস শুরু হওয়ার আগে বপন করা উচিত নয়; কারণ জাতটি ফুল ফোটার সময় উচ্চতাপ সহনশীল নয়।
ব্রি হাইব্রিড ধান ১ : ব্রি উদ্ভাবিত প্রথম হাইব্রিড ধানের জাতটি ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে প্রায় ১ টন বেশি ফলন দেয়। এটি যশোর ও বরিশাল অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে। এর কান্ড ও পাতা ঘন সবুজ ও খাড়া। কান্ড শক্ত বলে গাছ হেলে পড়ে না। এ ধানের চাষাবাদ পদ্ধতি একটু আলাদা।
ব্রি ধান ৪০ : এটি একটি সংবেদনশীল ধান। এ ধান চারা ও থোড় অবস্থায় ৮ ডিএস/মিটার লবণাক্ততা প্রতিরোধ করতে পারে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের যে জমিতে রাজাশাইল, কাজলশাইল, পাটনাই, মরিচশাইল ইত্যাদি স্থানীয় জাতের চাষাবাদ হচ্ছে ঐ সব জমিতে এ জাতের প্রতি হেক্টরে ফলন ৪.০-৪.৫ টন। এ জাতের গাছ মজবুত। প্রচলিত জাতের মতো এর ডিগপাতা একটু চওড়া, কিন্তু গাছ উচ্চতায় অনেকটা ছোট। এ জাতের জীবনকাল কাজলশাইলের সমান এবং পাটনাই ও মরিচশাইলের চেয়ে ৮-১৫ দিন আগাম। জাতটি আলোক সংবেদনশীল হওয়ায় প্রয়োজনে ৩০-৫০ দিনের চারা এক হাঁটু পরিমাণ(২৫-৩০ সেন্টিমিটার) পানিতে সহজেই রোপণ করা যায়। চালের পেটে কিঞ্চিত সাদাটে দাগ আছে। ধান সিদ্ধ করলে তা থাকে না। এর শীষের অগ্রভাগের কোন কোন ধানে শুঙ থাকে।
ব্রি ধান ৪১ : এটি রোপা আমন মৌসুমের উপযোগী একটি আলোক সংবেদনশীল ধান। এ ধান চারা ও থোড় অবস্থায় ৮ ডিএস/মিটার লবণাক্ততা প্রতিরোধ করতে পারে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের যে জমিতে রাজাশাইল, কাজলশাইল, পাটনাই, মরিচশাইল ইত্যাদি স্থানীয় জাতের চাষাবাদ হচ্ছে ঐ সব জমিতে এ জাতের প্রতি হেক্টরে ফলন ৪.০-৪.৫ টন। এ জাতের গাছ মজবুত। প্রচলিত জাতের মতো এর ডিগপাতা একটু চওড়া, কিন্তু গাছ উচ্চতায় অনেকটা ছোট। এর জীবনকাল ব্রি ধান ৪০-এর চেয়ে এক সপ্তাহ নাবী। জাতটির চারা প্রয়োজনে ৩০-৫০ দিনের হলে এক হাঁটু পরিমাণ পানিতে সহজেই রোপণ করা যায়। ধানে কোন শুঙ নেই। আবার দেখতে বিআর ২৩ এর অনুরূপ, কিন’ জীবনকাল ৮-১০ দিন আগাম।
ব্রি ধান ৪২ : ফলন প্রতি হেক্টর ৩.৫ টন। এটি বোনা আউশের আগাম জাত এবং মোটামুটি ক্ষরা সহিষ্ণু। বোনা আউশ মৌসুমে দেশের খরাপ্রবণ এলাকা বিশেষ করে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা এবং বৃষ্টিবহুল উভয় এলাকায় চাষাবাদের জন্য জাতটি উপযোগী। এটি ছিটিয়ে, লাইন করে ও ডিবলিং পদ্ধতিতে বোনা যায়।
ব্রি ধান ৪৩ : ফলন প্রতি হেক্টর ৩.৫ টন। এর কান্ড শক্ত। তাই সহজে বাতাসে গাছ হেলে পড়ে না। শীষের উপরি ভাগের ২-৪ টা ধানের ছোট শুঙ দেখা যায়। জাতটি মোটামুটি খরা সহিষ্ণু এবং আগাম বোনা আউশ মৌসুমে দেশের খরাপ্রবণ এলাকা বিশেষ করে ঝিনাইদহ,কুষ্টিয়া, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা এবং বৃষ্টিবহুল উভয় এলাকার জন্য জাতটি উপযোগী। এটি ছিটিয়ে,লাইন করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে বপন করা যায়।
ব্রি ধান ৪৪ : এটি দেশের জোয়ার ভাটা অঞ্চলের একটি রোপা আমন ধানের জাত। এ ধান দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষকদের কাছে জনপ্রিয়। বিআর ১১-এর মতোই এ ধান স্বাভাবিক রোপা আমনে চাষ করা যায়, তবে অলবণাক্ত জোয়ার ভাটা এলাকায় যেখানে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত জোয়ারের পানি আসে সেখানে চাষের উপযোগী। জাতটি কিছুটা টুংরো রোগ প্রতিরোধী। স্থানীয় জাত মৌ লতার চেয়ে এর ফলন প্রায় দ্বিগুণ এবং জোয়ার ভাটা প্রবণ জমিতে বিআর ১১ ও ব্রিধান ৩১ এর চেয়ে ফলন প্রতি হেক্টরে ১ টন বেশি। জাতটি বিআর ১১ এর চাইতে ১০-১৫ সেন্টিমিটার লম্বা হওয়া সত্বেও কান্ড শক্ত থাকায় সহজে হেলে পড়ে না। এর চাল মোটা হওয়ায় এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকের কাছে প্রিয়।
ব্রি ধান ৪৫ : এটি বোরো মৌসুমে আগাম জাত হিসেবে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে। এর গাছ ব্রি ধান ২৮ এর চেয়ে অধিক মজবুত। ডিগপাতা লম্বা এবং খাড়া। এর জীবনকাল ব্রি ধান ২৮- এর সমান, কিন্তু ফলন বেশি।
ব্রি ধান ৪৬ : রোপা আমন মৌসুসের উপযোগী। এ জাতটি আলোক সংবেদনশীলতায় ঠিক নাইজারশাইলের মতো। তাই দেশের বন্যা প্রবণ এলাকায় এর নাবীতে রোপণের উপযোগিতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফলাফলে দেখা গেছে, ১০-১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২৫-৩০ দিনের চারা রোপণ করলে প্রচলিত নাইজারশাইল এবং বিআর ২২-এর চেয়ে ব্রি ধান ৪৬ প্রতি হেক্টরে ১.০-১.৫ টন ফলন বেশি দেয়। কিন’ জীবনকাল বিআর ২২-এর সমান। এ জাতের গাছের আকৃতি ও ধান দেখতে বিআর ১১ এর মতো। জাতটি নাবীতে রোপণ ছাড়াও প্রচলিত রোপা আমনের জাত হিসেবেও চাষাবাদ করা যায়।
ব্রি ধান ৪৭ : এ জাতটি সাতক্ষীরার লবণাক্ত এলাকায় বোরো মৌসুমে চাষাবাদের জন্য নির্বাচন করা হয়। জাতটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এটি চারা অবস্থায় ১২-১৪ ডিএস/মিটার এবং বাকি জীবনকালব্যাপী ৬ ডিএস/মিটার লবণাক্ততা প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। জাতটির ডিগপাতা ব্রি ধান ২৮- এর চেয়ে চওড়া, খাড়া এবং লম্বা। এর চালের পেটে সাদা দাগ আছে তবে ধান সিদ্ধ করলে ঐ সাদা দাগ থাকে না। এ জাতটি লবণাক্ত অঞ্চলের যেখানে সেচের পানির লবণাক্ততা মাত্রা ৪ ডিএস/মিটার পর্যন্ত আছে সেখানে অনায়াসেই বোরো মৌসুমে এর আবাদ করা যাবে।
ব্রি ধান ৪৮ : ধারে জাত ও অবমুক্তির বছর ২০০৮ মৌসুম আউশ, উচ্চতা ১০৫ সেমি, জীবনকাল ১১০ দিন,জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি মোটা, ভাত ঝরঝরে, ধানের গড় ফলন ৫.৫ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৪৯ : ধারে জাত ও অবমুক্তির বছর ২০০৮ মৌসুম আমন, উচ্চতা ১০০ সেমি, জীবনকাল ১৩৫ দিন,জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি চিকন,নাইজারশাইলের মতো এবং বিআর ১১ থেকে ৭ দিন আগাম, ভাত ঝরঝরে, ধানের গড় ফলন ৫.৫ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫০ : ধারে জাত ও অবমুক্তির বছর ২০০৮ (বাংলামতি) মৌসুম বোরো, উচ্চতা ৮২ সেমি, জীবনকাল ১৫৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল লম্ব,চিকন, সুগন্ধি ও সাদা, ধানের গড় ফলন ৬.০ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫১ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১০ (আমন) মৌসুম, উচ্চতা ৯০ সেমি, জীবনকাল ১৪২ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি চিকন, স্বচ্ছ ও সাদা, ধানের গড় ফলন ৪.৫ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫২ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১০ আমন মৌসুম, উচ্চতা ১১৬ সেমি, জীবনকাল ১৪৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি মোটা, ধানের গড় ফলন ৫.০ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫৩ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১০ আমন মৌসুম, উচ্চতা ১০৫ সেমি, জীবনকাল ১২৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি চিকন, চারা ও প্রজনন ৪.৫ অবস্থায় ৮-১০ ডিএস/মিটার পর্যন্ত লবণাক্ততা সহনশীল
ব্রি ধান ৫৪ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১০ আমন মৌসুম, উচ্চতা ১১৫ সেমি, জীবনকাল ১৩৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি চিকন, চারা ও প্রজনন ৪.৫ অবস্থায় ৮-১০ ডিএস/মিটার পর্যন্ত লবণাক্ততা সহনশীল
ব্রি ধান ৫৫ :(বোরোমৌসুম) জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১১ (বোরো) মৌসুম, উচ্চতা ১০০ সেমি, জীবনকাল ১৪৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল চিকন ও লম্বা, মধ্যম মানের, ধানের গড় ফলন ৭.০ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫৫:(আউশ মৌসুম), বছর ২০১১ মৌসুম, উচ্চতা ১০০ সেমি, জীবনকাল ১০৫ দিন, লবণাক্ততা, খরা ও ঠাণ্ডা সহনশীল, ধানের গড় ফলন ৫.০ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫৬ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১১ (আমন) মৌসুম, উচ্চতা ১১৫ সেমি, জীবনকাল ১১০ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল লম্বা, মোটা ও রঙ সাদা এবং খরা সহনশীল, প্রজনন পর্যায়ে ১৪-২১ দিন বৃষ্টি না হলেও ফলনের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। ধানের গড় ফলন ৫.০ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫৭ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১১ (আমন) মৌসুম, উচ্চতা ১১৫ সেমি, জীবনকাল ১০৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল লম্বা, সরু চাল এবং খরা পরিহারকারী, প্রজনন পর্যায়ে ১০-১৪ দিন বৃষ্টি না হলেও ফলনের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। ধানের গড় ফলন ৪.৫ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫৮ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১২ বোরো মৌসুম, উচ্চতা ১০০ সেমি, জীবনকাল ১৫৫ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য দানা অনেকটা ব্রি ধান ২৯ এর মতো, তবে সামান্য চিকন, ধানের গড় ফলন ৭.২ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৫৯ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১৩ বোরো মৌসুম, উচ্চতা ৮৩ সেমি, জীবনকাল ১৫৩ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি মোটা এবং সাদা, ডিগ পাতা খাড়া ও গাঢ় সবুজ এবং হেলেপড়ে না, ধানের গড় ফলন ৭.১ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৬০ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১৩ বোরো মৌসুম, উচ্চতা ৯৮ সেমি, জীবনকাল ১৫১ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল লম্বা ও সরু এবং সাদা, ধানের গড় ফলন ৭.৩ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৬১ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১৩ বোরো মৌসুম, উচ্চতা ৯৬ সেমি, জীবনকাল ১৫০ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল মাঝারি সরু, সাদা এবং লবণাক্ততা সহনশীল, ধানের গড় ফলন ৬.৩ টন/হেক্টর।
ব্রি ধান ৬২ : জাত ও অবমুক্তির বছর ২০১৩ আমন মৌসুম, উচ্চতা ১০২ সেমি, জীবনকাল ১০০ দিন, জাতের বৈশিষ্ট্য চাল লম্বা, সরু এবং সাদা, মধ্যম মাত্রার জিংক সমৃদ্ধ এবং আগাম জাত, ধানের গড় ফলন ৩.৫ টন/হেক্টর।
কৃপ্র/ এম ইসলাম