‘রাস্ট্রের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য আব্দুল আওয়াল’
‘কর্মী বিজ্ঞানী আব্দুল আওয়াল, সকাল সন্ধা কাজ করতে গিয়ে দেখেছেন কিভাবে ব্রিতে পাক হানাদাররা হত্যা করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বাংলাদেশের ধান গবেষণার ইতিহাসে যে কজন মানুষ শুরু থেকে সম্পৃক্ত তাদের একজন কর্মী বিজ্ঞানী আব্দুল আওয়াল। তবে গবেষক হিসেবে নয়। গবেষণা সহকারী হিসেবে। কর্মী বিজ্ঞানী আব্দুল আওয়াল। কাজ করেছেন গবেষণা সহকারী হিসেবে। দেশের যেকটি জপ্রিয় ধানের জাত দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করেছে তার নেপথ্যের কারিগর আব্দুল আওয়াল।
যিনি ৮৪ বছর বয়সেও চালিয়ে যাচ্ছেন ধানের কৃত্রিম পরাগায়ণ। ভূমিকা রাখছেন নতুন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবনে। বাতাসে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। আমনে বিআর ১১ আর বোরোতে ব্রিধান ২৮ এবং ২৯। ফলন বেশী এবং রোগ বালাই কম হওয়ায় কৃষকের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়। গবেষকরা বলছেন, দেশের মোট উৎপাদিত ধানের প্রায় ৯০ ভাগই দখল করে আছে এই জাত গুলো। যা উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বা ব্রি।
ব্রির এরকম ৩২ টি জাত উদ্ভাবনে নেপথ্যের কারিগর এই গবেষণা সহকারী। যার মস্তিস্কের প্রতিটি কোষে বোনা ধনধান্যের বাংলাদেশ। পরাগায়ন বা সংকরায়নের এই দক্ষ শিল্পীর নাম আব্দুল আউয়াল। ব্রাক্ষ্মবাড়িয়ায় বেড়ে ওঠা, বেকার আওয়ালকে ঢাকা এনে ১৯৫৭ সালে প্রিপারেটর পদে চাকরি দেন তৎকালিন ঢাকা ফার্মের কৃষি রসায়নবিদ, ব্রির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. আমীরুল ইসলাম।তবে উফশী ধানের জাত উদ্ভাবন করতে সংকরায়নের কাজে দিক্ষা দেন ব্রির সাবেক মহাপরিচালক ড. শাহ মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
কর্মী বিজ্ঞানী আব্দুল আওয়াল সকাল সন্ধা কাজ করতে গিয়ে দেখেছেন কিভাবে ব্রিতে পাক হানাদাররা হত্যা করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের। কৈশোরের দুরন্তপনাকে দুরে ঢেলে দিয়ে সেই যে দেশের জন্য কাজ শুরু তা চালিয়ে যাচ্ছেন এখনো। ১৯৯৬ সালে ব্রি থেকে অবসর নেওয়ার পর তৎকালিন ইপসার অধ্যাপক আব্দুল হামিদের আগ্রহে শুরু করেন নতুন পথচলা।
তার সংকরায়নে উদ্ভাবিত হয় বিইউ ধান -১, এছাড়া দেশের ইতিহাসে প্রথম সুগন্ধি হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবনেও নেপথ্যের কারিগর তিনি। ৮৪ বছর বয়সে এসেও তিক্ষ্ণ দৃষ্টির সোনালী ধানের এই কারিগর পরাগায়ন করছেন খালি চোখে, কখনো হাতের দশ আঙ্গুলে । কখনো বা ইমাসকুলেটর দিয়ে। কেননা, ৬০ বছর ধরে তিন সন্তানের এই জনকের ভরসা ধৈর্য্য আর আত্মবিশ্বাস। জীবন সায়াহ্নে এসে উপলব্ধি করেছেন, রেখে যেতে হবে যোগ্য উত্তরসূরী।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন ব্রি গোল্ড মেডেল। তবে ব্রির সাবেক এই মহাপরিচালক মনে করেন রাস্ট্রের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য আব্দুল আওয়াল। তার মতে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের ৪৫ বছরে চালের উৎপাদন বেড়েছে ৩ গুন। যার অনেকটা জুড়ে রয়েছে এই কৃতি মানুষটির অবদান।
সুত্রঃ চ্যানেল ২৪ / কৃপ্র/এম ইসলাম