‘বাংলাদেশ প্রতি বছর দুই লাখ টন মধু উৎপাদন করতে সক্ষম’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ চলতি মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলে ২৫০ টনেরও বেশি মধু উৎপাদিত হয়েছে। এতে মৌ-চাষিরা ভাল আয়ের আশা করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) সূত্র জানায়, এবার গত বছরের চেয়ে ৫ গুণ বেশি মধু উৎপাদন হয়েছে। ডিএই’র অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মৌ-চাষিরা মধ্য নভেম্বর থেকে মধু সংগ্রহের কাজে জড়িত হন। তিনি বলেন, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ অঞ্চলে গত বছরের ৭৫ জনের স্থলে এবার মৌ-চাষি ২৫০ জনে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মৌ-চাষিরা জানান, বিভিন্ন গ্রামের সরিষা ক্ষেতের কাছে কৃষকরা সাড়ে ৭ হাজার মৌ-কলোনি স্থাপন করেছেন। এসব স্থানে সরিষার সুন্দর ফুল রয়েছে এবং দুই সপ্তাহে প্রত্যেক কলোনি থেকে প্রায় ৮০ কেজি করে মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। চাষিরা জানান, স্থানীয় ক্রেতা ও পাইকারদের কাছে উৎপাদিত মধুর এক-তৃতীয়াংশ দেড়শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার সামর্থ্য রয়েছে তাদের। অবশিষ্ট মধু তারা ব্যবসায়ী ও কোম্পানির কাছে বিক্রি করার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা বলেন, ‘আমরা যদি কোম্পানির কাছে দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা কেজি দরে মধু বিক্রি করতে পারি, তাহলে আমরা ভাল লাভবান হব।’
পবা উপজেলার দারুশা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বাবু বলেন, ‘আমি বড়বিল্লা এলাকায় ৬৩টি মৌ-কলোনি থেকে ৩৫ মণ মধু পেয়েছি। স্থানীয়ভাবে আমি ১২ মণ বিক্রি করেছি। আমি এখন কোম্পানির কাছে ভাল দামে অবশিষ্ট মধু বিক্রি করার জন্য অপেক্ষায় রয়েছি।’
ডিএই’র উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী জানান, জেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে এবং অনুকূল আবহাওয়ার কারণে সরিষার গাছ ভালভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, এর ফলে কৃষকরা সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ-কলোনি স্থাপন করেছেন এবং তারা বিপুল পরিমাণ মধু সংগ্রহ করতে সক্ষম হচ্ছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র দাস বাসসকে বলেন, মৌ-চাষিদের জন্য প্রযুক্তি সহায়তা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও ভাল বাজারজাতকরণের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, সরকার যদি এসব ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে দেশে ব্যাপক পরিমাণ মধু উৎপাদন করা সম্ভব। এতে বিদেশে মধু রফতানি করার নতুন একটা সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ প্রতি বছর দুই লাখ টন মধু উৎপাদন করতে সক্ষম বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/ এম ইসলাম