কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ লেবু চাষ লাভজনক হওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রংপুর অঞ্চলের ৪ হাজার ২০০ কৃষক তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) সূত্র জানায়, বাম্পার উৎপাদনের পাশাপাশি লাভজনক মূল্য গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র লেবু চাষ সম্প্রসারণে কৃষকগণ অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। ডিএই’র উদ্যান বিশেষজ্ঞ খন্দকার মো. মেসবাউল ইসলাম বলেন, কৃষকগণ তাদের বাগান, বসতবাড়ি ও পতিত জমিতে লেবু চাষের মাধ্যমে হাজার হাজার কৃষক আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করছেন এবং উৎপাদিত লেবু ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করছেন।
ভিটামিন সি’র চাহিদা পূরণের ওপর সাধারণ মানুষের মধ্যে পুষ্টি বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি এর উৎপাদন বৃদ্ধি করতে কৃষকদের লেবু চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। গৃহপালিত পশুপাখির হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে শস্য ক্ষেতের চারদিকে লেবু গাছ লাগাতে পারেন এবং এর থেকে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে পারেন, বলেন মেসবাউল।
রংপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষক আরিফুল হক বাটুল, আব্দুর রহমান, সুকুমার রায়, ইছাহাক আলী ও আইয়ুব আলী বলেন, প্রতিবছর অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য তাদের শস্য ক্ষেতের চারদিকে লেবু গাছ লাগানো হয়েছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার কৃষক আতিকুল ইসলাম, সামসুন্নাহার বেগম, আহাদ আলী, নবী রহমান, আব্দুল আজিজসহ অনেকে বলেন, লেবু চাষের মাধ্যমে তারা অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছেন।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার পাথরঘাটা খন্দকারপাড়া গ্রামের কৃষক কাশেম আলী বাসসকে বলেন, ভিটে মাটির ৪৮ ডেসিমেলের মধ্যে ১২ ডেসিমেল জমিতে লেবু চাষের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। তিনি এর থেকে বছরে আট থেকে নয় লাখ টাকা আয় করে থাকেন। ‘আমি স্থানীয় জাতের কাগোজি, চীনা ও ডাক জামির লেবু বেশী চাষ করেছি’ তিনি বলেন। তিনি আরো বলেন, ডাক জামির জাতের লেবু বেশী লাভজনক। এই লেবু জন্ডিস, কাশি জনিত রোগীর জন্য উপকারী।
রংপুরের ডিএই’র উপ-পরিচালক এসএম আশরাফ আলী বলেন, এই অঞ্চলে বাণিজ্যকভাবে লেবু চাষ শুরু হয়েছে এবং এর মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলের শত শত কৃষক ও সাধারণ মানুষ আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করছেন। ডিএই’র আঞ্চলিক অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অতিরিক্ত আয়ের জন্য লেবু চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের সহযোগিতা করছে।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/ এম ইসলাম