কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ‘সুস্থ সবল স্বাস্থ্য চান, বেশি করে সবজি খান’ প্রতিপাদ্যে শুরু হয়েছে ‘জাতীয় সবজি মেলা-২০১৭’। এটি চলবে আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী খামারবাড়ির আ. কা. মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ মেলা উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। আমন্ত্রিত অতিথিরা ফিতা কেটে মেলায় প্রবেশ করে ঘুরে দেখেন বিভিন্ন স্টল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ কৃষিখাতে সফল একটি দেশ। আমরা যখন ৯৬’ সালে হাইব্রিড সবজি উৎপাদনের চিন্তা করি তখন অনেকে অনেক কথা বলেছিল। কিন্তু আমি তাদের বলবো আপনাদের কথা যদি আমরা শুনতাম তাহলে সবজি উৎপাদনে এই বিপ্লব ঘটতো না।
তিনি বলেন, হাইব্রিড জাতের সবজি মাঠে নিয়ে যাওয়ায় আজ সবজি চাষে এই বিপ্লব ঘটেছে। বিশ্বে সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ মডেল। সমালোচনাকরীরা এক সময় এই হাইব্রিডের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল। কিন্তু আমরা তাতে কান দেই নাই। এর সুফল পাচ্ছি। সরকার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দেশের সবজি এখন বিদেশেও রফতানি করছি। যা এক সময় আমরা চিন্তা করতে পারতাম না।
সবজি ব্যবসায়ী অন্যায় করলে তা মেনে নেয়া হবে না উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আপনারা এগিয়ে যান, সরকার সাহায্য করবে। সরকার কোনো দিন ব্যবসা করবে না এবং করা উচিতও না। কিন্তু আপনারা যদি ব্যবসার নামে অন্যায় করেন, তাহলে সরকার চুপ করে বসে থাকবে না।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে সবজি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটেছে। আগে শুধু শীতকালে সবজি পাওয়া যেত, কিন্তু এখন আমাদের দেশে ১২ মাসই সবজি পাওয়া যায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সব ক্ষেত্রে সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা মানুষকে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়েছি। দেশের এই অগ্রযাত্রা চলমান থাকবে। কারণ মানুষের মনেও বিপ্লব ঘটেছে।
সবজির ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে পারলে কৃষকেরা আরও বেশি সবজি উৎপাদনে আগ্রহী হবেন। ফলে এর সুফল অনেক বেশি মিলবে। তিনি বলেন, কৃষকরা গত কয়েক বছর ধরে সবজি উৎপাদনে যে সফলতা দেখিয়েছে তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম নিশ্চিত করতে হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. আবুল কালাম আযাদ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন পরিচালক ড. শাহাবুদ্দিন আহমদ।
কৃষি মন্ত্রণলায় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি তথ্য সার্ভিসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই মেলায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৭৭টি স্টল রয়েছে। দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন রকমের সবজি। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে মেলা।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় শুধু সবজি নয়, সাজানো হয়েছে হরেক পদের পসরা। বেশ কয়েকটি স্টলে মধু বিক্রি হচ্ছে হরদম। রয়েছে অর্গানিক সবজির দোকান। দোকানীদের ভাষ্যমতে, কোনপ্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার ছাড়াই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হয়েছে এসব সবজি। তাই দোকনগুলোতে সবজির কাটতিও বেশ।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/এম ইসলাম