কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নওগাঁয় আলুগাছে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষেতের আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক। লোকসানের আশঙ্কাও করছেন তারা। কীটনাশক ব্যবহার করেও ছত্রাকের সংক্রমণ রোধ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে কর্মকর্তারা কোনো পরামর্শ না দেয়ায় কৃষি অফিসকে দুষছেন কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় আলু আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২ হাজার ৯৭৫, মান্দায় ৪ হাজার ৪০০, বদলগাছীতে ৩ হাজার ৮০০, ধামইরহাটে ৩ হাজার ৪৫০ ও রাণীনগরে ৫৭০ হেক্টরে এর চাষ হয়। দেশীর পাশাপাশি কার্ডিনাল, ডায়মন্ড ও গ্র্যানুলা জাতের আলু আবাদ হয়েছে। গত বছর ২৩ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছিল।
ছত্রাকের সংক্রমণে প্রথমে গাছের সামান্য জায়গায় বাদামি রঙ ধারণ করে। কাণ্ডগুলো কালো হয়ে গাছ ভেঙে যায়। এ রোগের নাম লেড ব্লাইড বা নাভিধস। আঞ্চলিকভাবে পঁচাকানি রোগ নামে পরিচিত। কৃষি অফিসের পরামর্শ না পাওয়ায় দোকানদারের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করছেন কৃষকরা। এছাড়া ৮-১০ দিন আগের বৃষ্টিতে ক্ষেতের আলুর ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চাষীরা। চলতি বছর উত্পাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নে শ্যামপুর গ্রামের আবুল কাশেম জানান, এবার দেড় বিঘা জমিতে দেশী আলুর চাষ করেছেন। বিঘাপ্রতি ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘা থেকে ৪৫-৫০ মণ আলু পাওয়া যাবে বলে আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ছত্রাকের সংক্রমণ কীটনাশক ব্যবহার করেও ঠেকানো যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় সব গাছ মরে যেতে পারে।
কীর্তিপুর গ্রামের আব্দুস সালাম এবার দুই বিঘা জমিতে বগুড়া থেকে পাপড়ি জাতের আলুবীজ সংগ্রহ করে আলুর আবাদ করেছেন। গাছ ভালোভাবে বেড়ে উঠলেও প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও কুয়াশায় পঁচাকানি রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যাচ্ছে।
সদর কৃষি কর্মকর্তা মজিবার রহমান বলেন, আলুর আবাদ নিয়ে কৃষকদের যথাসাধ্য পরামর্শ দিয়ে আসছি। তাই আলুর ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সত্যব্রত সাহার ভাষায়, আলু উত্পাদন এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তবে ক্ষেতে একটু রোগের সংক্রমণ হয়েছে। কীটনাশক ব্যবহার করলে রোগ সেরে যাবে। কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছে।
সুত্রঃ বনিক বার্তা / কৃপ্র/এম ইসলাম