কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বাঙ্গালীর শীতের খাদ্য তালিকায় আকর্ষণীয় বিষয় খেজুরের রস, গুড় আর এর তৈরি পিঠা-পায়েস। গ্রামাঞ্চলের গৃহস্থের বাড়ি বাড়ি ঘটা করে এখন চলছে শীতের আবেশে রসের পিঠা দিয়ে নাইওর-জামাই বরণের উৎসব। মাঘ মাসের শুরুতে শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে খেজুরের রস ও সুস্বাদু গুড়-পাটালির চাহিদা। বাড়ছে অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা তাড়াশের গ্রামগঞ্জের খেজুর গাছের কদর।
গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অতিথি গাছিরা। শীতের ভরা মৌসুমে রস সংগ্রহের জন্য শীতের আগমনের শুরু থেকেই খেজুর রস সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছেন তারা। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও রাজশাহী-বাঘা অঞ্চলের শতাধিক অতিথি গাছি উপজেলার গ্রাম-গঞ্জ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড়-পাটালি বানিয়ে স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করছেন। তারা নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে আবার কেউ কেউ নির্দিষ্ট পরিমাণ খেজুর গুড় দেয়ার চুক্তিতে পুরো মৌসুমের জন্য গাছ লিজ নিয়ে রস সংগ্রহ এবং সেই রস থেকে গুড় তৈরি করছেন।
এদিকে, সারা রাত টপ টপ করে ফোঁটায় ফোঁটায় রস পড়ে হাঁড়িতে জমা হয়। ভোরের আলো বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছিরা রসভর্তি মাটির হাঁড়ি নামিয়ে এনে এক জায়গায় জড়ো করে। পরে এই রস টিনের বড় বড় ট্রে এর মধ্যে জ্বাল দিয়ে ঘন করে এই গুড় ফর্মায় রাখা হলে খাঁটি সুস্বাদু গুড়-পাটালি তৈরি হয়। গাছিদের কয়েক জনের সঙ্গে কথা হলে তাদের ১জন রাজশাহী বাঘার হাফিজুর রহমান বলেন, বিগত ১৭বছর ধরে শীতের মৌসুমে শতাধিক অতিথি গাছি তাড়াশ উপজেলায় ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করে গুড়-পাটালি তৈরি করছেন। খেজুরের রসের তৈরি এসব গুড়-পাটালি স্থানীয় বাজারগুলোতে তারা ৭০ টাকা দরে পাইকারী দেন। খুচরা দোকানীরা ৮০ টাকা দরে বিক্রি করে থাকেন।
নভেম্বর মাসের মাঝামাছি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত এই ৪ মাস খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা যায়। এ সময় রস থেকে গুড়-পাটালিসহ পাতলা ঝোলা ও দানা গুড়ও তৈরি হয়। যার সাধ ও ঘ্রাণ স্বরূপে ভিন্ন। অত্যন্ত সুস্বাদু ও মানব দেহের উপকারিতার কারণে মানুষের কাছে দিন দিন অতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খেজুরের রস এবং এর তৈরি গুড়।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/এম ইসলাম