এস এম মুকুল ও এম এ মোমিন: বিদেশে আলু রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। ১৯৯১ সালের আগে বিশ্বের ২০টি দেশ থেকে আলু আমদানি করতে হতো। আর বর্তমানে ২৭টি দেশে আলু রপ্তানি হয়। আলু উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে আলু রপ্তানির সুযোগ অবারিত হয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে মাত্র ৩২ কোটি ২২ লাখ টাকার আলু রপ্তানি করেছিল। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তা ২৫০ কোটি ছাড়িয়েছে।
জানা গেছে, দেশে বছরে গড়ে ৮০ লাখ টনের বেশি আলু উৎপাদিত হচ্ছে, রপ্তানি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭০ লাখ টন। এর সঙ্গে আবার যোগ হয় আগের বছরের উদ্বৃত্ত আলু। ফলে প্রতিবছর অন্তত ১৬ লাখ টন আলু রপ্তানি করা সম্ভব। ৪০ হাজার টন আলু রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ব্রুনাইয়ে আলু রপ্তানি শুরু করছে বহুজাতিক কোম্পানি প্রাণ। সৌদি আরব, দুবাই, ওমান, কুয়েত, কাতার, হংকং, নেপাল ও শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশে প্রাণের প্যাকেটজাত আলু পাওয়া যাবে। কুড়িগ্রামের আলু যাচ্ছে রাশিয়ায়। বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাগ্রোবেন গ্রানুলা ও কার্ডিনাল জাতের আলু মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলংকা যাচ্ছে।
উৎপাদনের কারিগর কৃষক
আলু উৎপাদনের এ সাফল্যের মূল কারিগর কৃষকই। মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, নীলফামারী, রংপুরের বদরগঞ্জ, পঞ্চগড়, যশোর, বগুড়া, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ ও লালমনিরহাট জেলায় প্রায় প্রতিবছর আলুর বাম্পার ফলন হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪০টি জাতের উন্নত আলুর চাষাবাদ হচ্ছে কৃষকপর্যায়ে। উচ্চফলনশীল জাতের আলুবীজ সম্প্রসারিত হয়েছে শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি আবাদি এলাকায়। এক দশক আগেও উৎপাদন ছিল ৫০ হাজার টনের নিচে। এখন তা এগোচ্ছে কোটি টনের দিকে। সরকারও আলুর উৎপাদন বাড়াতে নানাভাবে উৎসাহিত করেছে কৃষককে দেয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তা। দেশে আলু উৎপাদন কয়েক বছর ধরে ৮২-৮৯ লাখ টনের ঘরে ওঠানামা করছিল। প্রথমবারের মতো তা ৯০ লাখ টন ছাড়াল। প্রাথমিক হিসাবে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে আলু উৎপাদন হয়েছে ৯২ লাখ ৫৪ হাজার টন। প্রতি কেজি গড়ে ১২ টাকা হিসাবে উৎপাদিত এ আলুর মূল্য ছাড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা।
কৃপ্র/এম ইসলাম