কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রংপুর এলাকায় দুগ্ধজাত পণ্য বিকাশয়মান হওয়ায় সাধারণ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। সাধারণ মানুষের পুষ্টিজাত খাবার চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এর ফলে এই অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতিতে পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে। রংপুর চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, মূল ভূখন্ড ও চর এলাকায় দুগ্ধজাত খামার গড়ে ওঠায় এই এলাকায় বিপুল পরিমাণ দুগ্ধ উৎপাদন হচ্ছে। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, হিমায়ত কারখানা, সংরক্ষণ ও বিপণন ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় সম্ভাব্যময় এই সেক্টরটি বিকশিত হতে পারছে না।
রংপুর দিনাজপুর পল্লী উন্নয়ন সমিতি (আরডিআরএস) কৃষি ও পরিবেশ বিষয়ক সমন্বয়কারী মামুনউর রশীদ বলেন, মূল ভ’খন্ড ও চর এলাকার শতাধিক দরিদ্র্য পরিবার পশু পালন করে দুধ উৎপাদনের মাধ্যমে তাদের আর্থিক সক্ষমতা ফিরাতে পেরেছেন। তিনি বলেন, “গ্রামীণ অর্থনীতি পশুপালনের মাধ্যমে বিকশিত হচ্ছে। পর্যাপ্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থা ও দুগ্ধজাত কারখানা গড়ে না ওঠায় খামারারীরা দুধের পর্যাপ্ত দাম পাচ্ছেন না।” আঞ্চলিক কৃষি খামার সম্প্রচার কর্মকর্তা আবু সায়েম বলেন, সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে দুগ্ধ খামার সম্প্রসারণ করতে হবে। দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপন করতে হবে। এসব উদ্যেগের কারণে নতুন ধারার সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, উৎপাদিত দুগ্ধ পণ্য সমবায় ভিত্তিক বাজারজাতকরণ ও বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলে এলাকাবাসী সুফল পাবে। এর ফলে অর্থনৈতিক সফলতা অর্জন সম্ভব হবে।মিটাপুকুর এলাকায় অবস্থিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রংপুর ডেইরী ও ফুড প্রডাক্টস (আরডি মিল্ক) ইতোমধ্যে এলাকার লোকজনকে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নিজেদেরকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেছে। আরডি মিল্কের ম্যানেজার আশরাফুল আলম বলেন, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এলাকার গরিবদের মাঝে মাঝে ইতোমধ্যে শতাধিক গাভি বিতরণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো গাভি বিতরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেক গাভির মালিকগণ দুধ সরবরাহের মাধ্যমে নিজ নিজ গাভির মালিক হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি তাদের নামে মালিকানার কাগজসহ বুঝে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আরডি মিল্ক কর্তৃপক্ষ আগামীতে ৩০ হাজার মানুষের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি দেশের এক নম্বর দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।” কারখানাটি ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণ প্রাস্তরিত টাটকা দুধ, আমের গন্ধ মিশ্রিত দুধ, চকোলেট গন্ধ দুধ, কলার গন্ধ মিশ্রিত দুধ, বাটার ওয়েল, ঘি, ক্যান্ডিসহ অন্যান্য পণ্য উৎপাদন এবং বিপণন করেছে।
আরডি মিল্কের একজন সুবিধাভোগী হলেন সালাইপুর গ্রামের আমেনা বেগম। তিনি বলেন, দশ বছর আগে বাচ্চাসহ একটি গাভি গ্রহন করেছিলেন। দুধ সরবরাহ কারার মাধ্যমে বর্তমানে তিনি গাভির মালিকানা লাভ করেছেন। রংপুর শিল্প ও বনিক সমিতির সহ-সভাপতি মোস্তফা আহমদ বলেন, দেশী উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি বিদেশী উদ্যোক্তাগণ রংপুর এলাকায় প্রত্যাশিত দুগ্ধ খামার গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম