কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বরেন্দ্র অঞ্চলে এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে মসুর ডালের চাষ হয়েছে। অধিক লাভের আশায় কৃষকরা গমসহ অন্যান্য রবি শষ্যের আবাদ ছেড়ে মসুরে ঝুঁকেছেন। কিন্তু শীতের কুয়াশার কারণে পুড়ে যাচ্ছে কৃষকের মসুরের ক্ষেত, পুড়ছে কৃষকের কপালও। কৃষকরা বলছেন, গাছে ফুল আসতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে মাঠের পর মাঠ মসুরের ক্ষেতে রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে।
প্রথমে গাছের ওপরের অংশ পুড়ে লাল হয়ে যাচ্ছে। এরপর পুরো গাছটিই খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। এতে জমির বেশিরভাগ অংশ ফাঁকা হয়ে পড়ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, রুট রচ ও স্টেম ফাইলাম রোগের প্রভাবে এমনটি হচ্ছে। বৃষ্টি, কুয়াশা, মেঘলা আকাশ, স্যাঁতসেঁতে মাটি ও অতিরিক্ত শিশিরের কারণে এ রোগ দুটি দেখা দেয়। সম্প্রতি বরেন্দ্র অঞ্চলে বৃষ্টির পর অতিরিক্ত কুয়াশা ও আকাশ মেঘলা থাকায় এসব বালাই দেখা দিয়েছে।
তবে সময়মতো ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে নিস্তার মিলতে পারে এসব রোগ থেকে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলায় এবার ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে মসুর ডালের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে খ্যাত জেলার গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলায় মসুরের চাষ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তবে বরেন্দ্রের নাচোল, নিয়ামতপুর ও মহাদেবপুর উপজেলার ব্যাপক জমিতে মসুর চাষ হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব এলাকার মসুর ক্ষেতও কুয়াশার প্রভাবে পুড়ছে। গোদাগাড়ী উপজেলায় এবার গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ জমিতে মসুর ডালের চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের স্থানীয় ব্লক সুপারভাইজার আবদুস সামাদ বলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণে তারা কাজ করছেন। কৃষকদের এই মুহূর্তে কী করণীয় তা তাদেরকে জানানো হচ্ছে। এতে রোগ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
বৈরী আবহাওয়া ও অপরিশোধিত নিম্নমানের বীজের কারণে এসব রোগ হতে পারে। তবে এতে কৃষকদের খুব বেশি ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেন তিনি। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বলেন, একটি মাঠের এক জমিতে রোগ দেখা দিলে পুরো মাঠেই স্প্রে করার জন্য বলা হচ্ছে। আর কৃষকদের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন / কৃপ্র/এম ইসলাম