কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ উন্নয়নের শীর্ষে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি দেশের ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মেলায় এর প্রতিফলন ঘটেছে। সেখানে ব্যাপক ব্যবধানে প্রথম স্থান অর্জন করেছে এ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত ৯, ১০ ও ১১ জানুয়ারি দেশের ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠিত হয় উন্নয়ন মেলা। এ মেলায় দেশের সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশ নেয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সারাবছরের কার্যক্রম তুলে ধরা হয় এ মেলায়। সকল মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা তাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষে কর্মরত জেলার কার্যক্রম তুলে ধরেন। এতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানের প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয় রয়েছে সবার উপরে। শুধু উপরে নয়, দ্বিতীয় স্থানে যে মন্ত্রণালয় রয়েছে তার ব্যবধান প্রায় তিনগুণের বেশি। কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি।
মেলার ফল পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৫ জেলায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে তারা। প্রথম স্থান অর্জনকরী জেলাগুলো হলো- ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বি. বাড়িয়া, ফেনী, বান্দারবান, জয়পুরহাট, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্ঠিয়া এবং বরিশাল। এছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানেও রয়েছে সবার উপরে। সবচেয়ে বেশি জেলায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে এ কৃষি মন্ত্রণালয়। মোট ১৩টি জেলায় দ্বিতীয় হয়েছে তারা। জেলাগুলো হলো টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, লক্ষ্মীপুর, পাবনা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, যশোর, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী এবং শরীয়তপুর। এছাড়া তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে নয়টি জেলায়। তৃতীয় স্থান অর্জনকারী জেলাগুলো হলো মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, রাজশাহী, নওগাঁ, রংপুর, খুলনা ও ঝালকাঠি। সব মিলিয়ে ৬৪ জেলায় মোট ২৭টি (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়) স্থান দখল করেছে এ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ বিভাগ মোট ১১টি স্থান (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়) অর্জন করেছে। এর মধ্যে প্রথম হয়েছে চারটি জেলায়, দ্বিতীয় হয়েছে ছয়টি জেলায় এবং তৃতীয় হয়েছে একটি জেলায়। তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে সড়ক বিভাগ। তারা মোট পাঁচটি স্থান (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়) অর্জন করেছে। প্রথম স্থান অর্জনকারী জেলা চারটি হলোÑ নওগাঁ, গাইবান্ধা, পঞ্চগড় এবং গোপালগঞ্জ। এর মধ্যে প্রথম হয়েছে একটি জেলায়, দ্বিতীয় হয়েছে তিনটি এবং তৃতীয় হয়েছে একটি জেলায়। দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী জেলাগুলো হলোÑ নরসিংদী, হবিগঞ্জ, বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী এবং ফরিদপুর। এছাড়া তৃতীয় স্থান অর্জনকারী একমাত্র জেলা হলো মাগুরা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, উন্নয়ন মেলায় আমরা প্রথম হয়েছি। আমরা দেশের উন্নয়নে বড় অবদান রাখি। তিনি বলেন, অতীতে দেশে মঙ্গা ছিল। দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাত। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এর দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে। তিনি বলেন, বিশেষ করে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বলিষ্ঠ এবং দায়িত্বশীল কর্মকা-ে দ্রুত বাংলাদেশের দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে। তিনি একের পর এক কৃষিবান্ধব কর্মসূচী গ্রহণ করায় কৃষকরাও লাভবান হয়েছে। সার, তেল, বীজের দাম কমিয়ে তিনি কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর মাত্র দুই বছরের মাথায় দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া স্বল্প পরিমাণ কৃষিজমিতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশের খাদ্য পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও বেশি উৎপাদনশীল জাতের ধান উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখা হচ্ছে। এতে গবেষণার খাতকে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। সার্বিক সহযোগিতা পেয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীরা তাদের কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেন এবং উত্তরোত্তর সাফল্য অর্জন করছেন।
তিনি বলেন, কৃষিমন্ত্রী তার দফতরের যে কোন দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে সর্বদাই সোচ্চার রয়েছেন। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সকল স্তরে সকলে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেন- এটি তারই প্রমাণ। তিনি বলেন, অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও এভাবে এগিয়ে এলে দেশ আরও দ্রুত এগিয়ে যেত।
সুত্রঃ জনকণ্ঠ / কৃপ্র/এম ইসলাম