কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নানা রকম ঔষধি গুণসমৃদ্ধ পাথরকুচি পাতা। এ গাছের পাতা প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে চিকিৎসার ক্ষেত্রে। এর উদ্ভিদতাত্তি্ক নাম , পাথরকুচি, পাথান বেইদ, পাষাণ ভেদ। স্থানীয় নাম , পাথরকুচি। ভেজষ নাম , Kalanchoe pinnata Pers Crassulaceae ব্যবহার্য অংশ , পাতা
রোপণের সময় : বছরের যে কোনো সময়ে পাথরকুচি রোপণ করা যায়। আমাদের দেশে আবাদি, অনাবাদি ও বনজ সব ধরনের হয়ে থাকে। যে কোনো মাটিতে এ গাছ জন্মে, এর পাতা ভেজা মাটির ওপর রেখে দিলে পাতার খাঁজ কাটা অংশ থেকে কচুরি পানার বীজের মতো পাথরকুচির বীজ বের হয়। পাথরকুচি বহু বর্ষজীবী সবুজ পাতাবিশিষ্ট গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত দেড় থেকে তিন ফুট উঁচু হয়ে থাকে। এর পাতা মাংসল এবং মসৃণ। পাতা দেখতে অনেকটা ডিম্বাকৃতি। কিনারা খাঁজকাটা। মূলকাণ্ডের অগ্রভাগে গুচ্ছবদ্ধ নিম্নমুখী ফুল হয়। দেখতে ঝালরবাতির মতো। ভিতরে ফাঁপা। ফুল লম্বায় এক থেকে দেড় ইঞ্চি হয়ে থাকে। পুষ্পের বাইরের দিকে সবুজ লাল ও সাদা দাগ থাকে। শীতকালে ফুল ও গ্রীস্মকালে ফল হয়।
ঔষধি গুণ : মেহ, সর্দি, মূত্র রোধে, রক্তপিত্তে, পেটফাঁপায়, শিশুদের পেটব্যথায়, মৃগীরোগে পাথরকুচির ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। সর্দিজনিত কারণে শরীরের নানা স্থানে ফোঁড়া হলে ব্যথা হয়। যাকে মেহ বলা হয়। এক্ষেত্রে পাথরকুচির পাতার রস এক চামচ করে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়। যে সর্দি পুরানো হয়ে গেছে, সেই ক্ষেত্রে এটি বিশেষ উপযোগী। এই কফ বিকারে পাথরকুচি পাতা রস করে সেটাকে একটু গরম করতে হবে এবং গরম অবস্থায় তার সাথে একটু সোহাগার খৈ মেশাতে হবে। ৩ চা চামচের সাথে ২৫০ মিলিগ্রাম যেন হয়। তা থেকে ২ চা চামচ নিয়ে সকালে ও বিকালে ২ বার খেতে হবে। এর দ্বারা পুরানো সর্দি সেরে যাবে এবং সর্বদা কাশি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
কেটা বা থেতলে গেলে টাটকা পাতা পরিমাণমতো হালকা তাপে পাতা গরম করে কাটা বা থেতলে যাওয়া স্থানে সেক দিলে আরাম পাওয়া যায়। পিত্তজনিত ব্যথায় রক্তক্ষরণ হলে দু’বেলা এক চা চামচ পাথর কুচির পাতার রস দুইদিন খাওয়ালে সেরে যাবে।
অনেকের দেখা যায় পেটটা ফুলে গেছে, প্রস্রাব আটকে যাছে, আধোবায়ু, সারছে না, সেই ক্ষেত্রে একটু চিনির সাথে এক বা দুই চা চামচ পাথর কুচির পাতার রস গরম করে সিকি কাপ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এর দ্বারা মূত্র সরল হবে, আধোবায়ুরও নিঃসরণ হবে, ফাঁপাটাও কমে যাবে। শিশুর পেটব্যথা হলে, ৩০-৬০ ফোঁটা পাথর কুচির পাতার রস পেটে মালিশ করলে ব্যথার ঊপশম হয়। তবে পেটব্যথা নিশ্চিত হতে হবে।
মৃগী রোগে রোগাক্রান্ত সময়ে পাথর কুচির পাতার রস ২-১০ ফোঁটা করে মুখে দিতে হবে। একটু পেটে গেলেই রোগের ঊপশম হবে। শরীর জ্বালাপোড়ায় দু’চামচ পাথর কুচি পাতার রস আধাকাপ গরম পানিতে মিশিয়ে দু’বেলা সেবনে শরীরের জ্বালাপোড়া দূর হয়।
কৃপ্র/ এম ইসলাম