কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ চাল কুমড়া আর কলাইয়ের ডালের বড়ি বানানোর ধুম লেগেছে মেহেরপুরে । চাল কুমড়া ও কুমড়ার বড়ি বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন মেহেরপুরের অনেক গ্রামীণ নারী। কলাইয়ের ডাল আর চাল কুমড়া দিয়ে তৈরী হয় সুস্বাদু বড়ি। এ বড়ি নিয়ে আছে অনেক গল্প, কবিতা। মেহেরপুরের বিভিন্ন বাড়িতে এই শীতের সকালে চলছে বড়ি দেয়া। একই সাথে পুকুর, নদী ইত্যাদি জলাশয়ে কুমড়োর বড়ি দেবার জন্য কলাইয়ের ডাল ধোয়ারও ধুম পড়েছে। বাড়ির বউ-শাশুড়ি-মেয়েরা মিলে পুকুর আর নদীতে কলাইয়ের ডাল ধুতে দেখা যায়।
মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে, বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত পুকুরপাড় ও ভিটায় চাল কুমড়া পেকে ঝুলছে। জেলার মাঠগুলো থেকে পাকা কুমড়ো সংগ্রহ করতে দেখা যায়। বাজারে চাল কুমড়া ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা গেছে। খুচরা বাজারে প্রতিটি কুমড়া ৫০ থেকে ২৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এই কুমড়া সংগ্রহ করে বাড়ির বৌ-ঝিরা বড়ি তৈরি করছে।
মেহেরপুর শহরের গড় পুকুরে কলাইয়ের ডাল ধুতে এসে রানী হালদার বলেন,, শীতের সকালে বড়ি আর মাছ রান্না থাকলে আর কোন তরকারি লাগে না। মাছ আর বড়ি দিয়েই সবাই তৃপ্তি করে খাবার খাই। শীত কালে যে বড়ি বানিয়ে রাখি তা সারা বছর ব্যবহার করি।। মেহেরপুর শহরের বড়ি বিক্রেতা আনোয়ারা বেগম জানান, সারা বছর তিনি চাল কুমড়া ও কলাইয়ের ডালের বড়ি বিক্রি করেন। তবে শীত কালে বড়ির চাহিদা থাকে বেশি থাকে।
বড়ি তৈরি করতে পরিশ্রম বেশি হলেও লাভও হয় বেশি। ৩০০-৪০০ টাকা কেজি দরে বড়ি বিক্রি হয়। আগে সব সময় কলাই পাওয়া গেলেও কুমড়া পাওয়া যেত না। কিন্তু এখন বড়ি দেওয়ার জন্য কুমড়াও পাওয়া যায় সব সময়। সদর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের কুমড়া চাষী আকবর আলী জানান, কুমড়ার বড়ির চাহিদা থাকায় গত কয়েক বছর ধরে এই ধানী জমিতে কুমড়া চাষ করে ভাল লাভ করতে পেরেছি। গত বার ১০ কাঠা জমিতে কুমড়ার চাষ করে ১৭ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করেছি। এবার একবিঘা জমিতে কুমড়া চাষ করেছি।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাল কুমড়ার চাষ হচ্ছে। এবার ২৯২ হেক্টর জমিতে চাল কুমড়োর চাষ হয়েছে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। প্রতি বিঘাতে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার কুমড়ো বেচা কেনা হবে। যা অনেক লাভজনক। এই কুমড়ো চাষ মাত্র ১শ’ দিনে হয়।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম