কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ প্রযুক্তি , কৃষিমুখী পরিকল্পনা ও সরকারি সহায়তার সুবাদে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলছে দেশের কৃষি উৎপাদন। আট বছর ধরে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ছে, ভরে উঠেছে শস্যভাণ্ডার। আট বছরের ব্যবধানে খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এমন ধারাবাহিক অগ্রযাত্রাকে বিস্ময়কর মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। সরকার এ জন্য কৃতিত্ব দিচ্ছে ফসলের মাঠে যারা শ্রম-ঘাম দিয়েছে, সেই কৃষকদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজকের এ অর্জন সম্ভব হয়েছে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির কারণেই।
শুধু মাঠে নয়, সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতেও ব্যাপক সাফল্য পাওয়া গেছে। কৃষিসচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ধারাবাহিক এ সাফল্যের কৃতিত্ব প্রথমত কৃষকদের জন্যই উৎসর্গ করতে হবে। তাদের নিরলস পরিশ্রম আর ঘাম ঝরানোর ফলেই এমন সাফল্য অর্জন হচ্ছে। তাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। মূলত সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির কারণেই কৃষকরা উৎসাহ পাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে উৎপাদনে।
মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে সরকার যে কৃষিবান্ধব নীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তা আগে কখনোই ছিল না। বিশেষ করে সার, কীটনাশক ও কৃষি উপকরণে সরকারের ভর্তুকি, সেচের ব্যবস্থা, ১০ টাকায় কৃষিঋণের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, কৃষি কার্ড বিতরণ, নিত্যনতুন উন্নত প্রযুক্তির জোগান দিয়ে যাওয়া বড় নিয়ামক হয়ে উঠেছে উৎপাদনে এমন সাফল্যের পেছনে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষি উপকরণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে কৃষকদের মধ্যে প্রায় সোয়া দুই কোটি কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। ১০ টাকার বিনিময়ে কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার কার্যক্রম চালু করা কৃষকদের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর টনিক হিসেবে কাজ করেছে। ফলে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে দেশের মূল খাদ্যশস্য (চাল, গম, ভুট্টা) উৎপাদন ছিল তিন কোটি ৩৩ লাখ টন, তা বিদায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এসে দাঁড়ায় তিন কোটি ৯১ লাখ টনে। একইভাবে বেড়েছে ডাল, পেঁয়াজ ও পাটের উৎপাদন। পাশাপাশি উদ্ভাবিত হয়েছে নতুন নতুন জাতের বিভিন্ন ফসল। গতি পেয়েছে গবেষণা কার্যক্রম, বেড়েছে কৃষি সহায়তামূলক পদক্ষেপ।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ধারাবাহিক সাফল্যকে এগিয়ে নিতে সরকারের সহায়তার সঙ্গে আমরা কৃষকের সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিচ্ছি। কৃষক আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন। কোন জাত নেবে, কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, কোন সার-কীটনাশক তাদের জন্য ভালো বা মন্দ তা এখন কৃষকরা নিজেরাই যাচাই-বাছাই করে প্রয়োগ করে। গত ৮-৯ বছরে ধারাবাহিক অগ্রগতির পেছনে আরেকটি বড় কারণ ছিল এই সময়ের মধ্যে প্রকৃতিগত বড় কোনো দুর্যোগ ঘটেনি। ’
ড. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল এ ধারাকে আরো টেকসই করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘আমাদের সব সময় নজরে রাখতে হবে বিভিন্ন কারণে কৃষিজমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এই কম জমিকেই উৎপাদন বাড়ানোর জন্য টেকসই পদ্ধতি বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে এখন জোর দেওয়া হচ্ছে চার ফসলি চাষাবাদের ওপর। এ জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ইতিমধ্যে ১৫ জেলায় কাজ শুরু হয়েছে। ’
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষি পুনর্বাসনের আওতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত ১২টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে গম, সরিষা, ভুট্টা ও আলু ফসলের বীজ ও রাসায়নিক সার বিনা মূল্যে সরবরাহ করতে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। একই সঙ্গে রবি ও খরিফ মৌসুমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য গম, ভুট্টা, খেসাড়ি, ফেলন ও গ্রীষ্মকালীন মুগ চাষাবাদে প্রণোদনা সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। চলছে উফশি আউশ ও নেরিকা আউশ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বীজ ও রাসায়নিক সার সরবরাহ করার আলাদা প্রণোদনা কর্মসূচি।
৬৪টি জেলার মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ধঞ্চে চাষ এবং কুমড়া জাতীয় সবজির মাছি পোকা দমনে সেক্সফেরোমন ট্রাপ ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উপকরণ বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি সহায়ক কর্মসূচির মধ্যে ডাল, তেল, মসলা ও ভুট্টাসহ ২৪টি ফসল উৎপাদনের জন্য মাত্র ৪ শতাংশ হার সুদে বিশেষ কৃষিঋণ প্রদানে সহায়তা, প্রযুক্তি সম্প্রসারণে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ, কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে কৃষক পরিবারকে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান ও ১০ টাকার বিনিময়ে কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার কার্যক্রম চালু রেখে কৃষকদের ক্ষমতায়ন করা হয়েছে।
পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান হারে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধির কারণে মাটিতে জৈব পদার্থসহ বিভিন্ন প্রকারের পুষ্টি উৎপাদনে জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধিতে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভেজাল বা অনুমোদনবহির্ভূত সার উৎপাদন ও বাজারজাতের কারণে ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে এবং দুটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল : এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে ৩৩টি গবেষণা প্রকল্প বিভিন্ন কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। গবেষণা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এ কাউন্সিল একটি রূপকল্প দলিল ২০৩০ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি টিম গঠনের মাধ্যমে সারা দেশের মাঠপর্যায়ের গবেষণা কার্যক্রম ও প্রযুক্তি হস্তান্তর কর্মসূচি পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন করছে। বিটি বেগুনের চারটি জাত উদ্ভাবন, প্রতিকূল আবহাওয়ার উপযোগী করে ধান ও গমের জাত উন্নয়নসহ পরিচর্যা কলাকৌশল নির্ধারণ করে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকের মধ্যে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তাপসহিষ্ণু গমের জাত ও লবণাক্ততাসহিষ্ণু ধানের জাত দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন : বীজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিএডিসির বীজ উইং কর্তৃক ৯টি প্রকল্প ও সাতটি বীজ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিএডিসি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিভিন্ন ফসলের এক লাখ ২৮ হাজার টন বীজ উৎপাদন ও এক লাখ ২৪ হাজার টন বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৭৪ হাজার ৫৫৮ টন বোরো ধানের বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে।
বিএডিসি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিশেষ জাতের সুপার হাইব্রিড ধানের ৪৫৭ টন বীজ উৎপাদন ও ৬২৬.২৫ টন বোরো বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া ১৬ হাজার ৫৩৩ টন গম বীজ উৎপাদন করা হয়েছে। সাতটি হিমাগার নির্মাণ ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেচের জন্য ৫৮০ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ, ৫৫৮ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণ, ১১টি সৌরশক্তি চালিত সেচ পাম্প স্থাপন, ১১.২১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ, ৭৫৬টি সেচ অবকাঠামো নির্মাণ, ৬১০টি শক্তিচালিত পাম্প স্থাপন, ১১৮টি গভীর নলকূপ স্থাপন, ১৪৯টি গভীর নলকূপ পুনর্বাসন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট : কৃষি গবেষণা উইংয়ের বিভিন্ন গবেষণা বিভাগ পাটের জার্মপ্লাজমের চারিত্রিক গুণাগুণ মূল্যায়ন, জাত উদ্ভাবন, বালাই ব্যবস্থাপনা, কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা, সার ব্যবস্থাপনা, পাটভিত্তিক শস্য পর্যায় উদ্ভাবন, উন্নত পচন পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে বছরে ১২১টি গবেষণা পরীক্ষণ বাস্তবায়ন করেছে। জিন ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা ৫১ জাতের মলিকুলার ক্যারেক্টারাইজেশন করা হয়েছে।
দেশি, তোষা ও কেনাফের বিভিন্ন জাতের এক হাজার ৪৮৫ কেজি প্রজনন বীজ উৎপাদন করা হয়েছে। পাটের পোকামাকড় দমনে ১৫টি কীটনাশক ও ৯টি মাকড়নাশক মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা করে পাটচাষিদের ব্যবহারে জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বিভিন্ন আঞ্চলিক ও উপকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় ৫ দশমিক ২ টন প্রজনন বীজ ও টিএলএস উৎপাদন করা হয়েছে। এ ছাড়া জেটিপিডিসি উইংয়ে পাট, তুলা ও ভেড়ার লোমের সংমিশ্রণে প্রোডাক্ট তৈরি সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম চলছে। পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কিছু কাপড় তৈরি করা হয়েছে এবং আটটি গবেষণা কার্যক্রম ল্যাবরেটরি পর্যায়ে চলছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট : এ প্রতিষ্ঠান ১৭টি ফসলের ৩০টি জাত অবমুক্তকরণ ও ২২টি ফসলের উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়। বাংলাদেশে গমের ব্লাস্ট রোগ শনাক্ত হয়েছে। কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর, বরিশাল ও ভোলা জেলায় গমের এ নতুন রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ রোগের আক্রমণে এসব জেলার চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। এ রোগের বিস্তাররোধে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টেকস গবেষণা কার্যক্রমের প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট : ২০১৫-১৬ মৌসুমে উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে ব্রি ধান ৭০, ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৭২, ব্রি ধান ৭৩, ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৭৬ ও ব্রি ধান ৭৭ উদ্ভাবন এবং বোরো মৌসুমের জন্য ব্রি ধান ৭৪ উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ ছাড়া উপকূলীয় এলাকার জন্য তিনটি লবণসহিষ্ণু সারির আঞ্চলিক উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। কম মাত্রার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত ধান ব্রি ধান ৪৬ ও ব্রি ধান ৬৯ চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট : ২০১৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট করা হয়েছে। বিএসআরআইয়ের সমন্বিত গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় আরবীয় খেজুরগাছের জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করা হয়েছে। চরাঞ্চলে উন্নত পদ্ধতিতে ইক্ষু উৎপাদন প্রযুক্তি, গুড় তৈরি ও ব্যবহারবিষয়ক চাষি বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বিএসআরআই ডমেস্টিক কেন ক্রাশার যন্ত্র, সুগারবিট রুট রট রোগ দমন প্রযুক্তি, সুগারবিট ক্যাটারপিলার পোকা দমন ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি, সুগারবিটের প্রমিতকৃত কৃষিতাত্ত্বিক প্রযুক্তি, বিএসআরআই পাওয়ার উইডার যন্ত্রের সফল ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট : বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) কর্তৃক উদ্ভাবিত ধানের জাত বিনা ধান-১৮, দুটি টমেটোর জাত (বিনা টমেটো-১১ ও বিনা টমেটো-১২), দুটি ছোলার জাত (বিনা ছোলা-৯ ও বিনা ছোলা-১০), একটি তিলের জাত (বিনা তিল-৪) এবং মসুরের (বিনা মসুর-১০) একটি জাতসহ আটটি উফশী জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। ফলে ধান কাটার পর সহজেই গম, আলু, সরিষা ও অন্যান্য রবি ফসল চাষ করা যায়। বিনা ধান-১৮ মাতৃজাত ব্রি ধান-২৯ এর চেয়ে ১০-১৫ দিন আগে পাকে; কিন্তু ফলন প্রায় সমান (৭.২-৯ হে./টন)। বিনা উদ্ভাবিত ১২টি ফসলের ৯০টি জাতের মধ্যে আটটি ফসলের ৪০টি জাতের প্রজনন ও মানসম্মত বীজ উৎপাদন ও বিতরণ করা হচ্ছে।
মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট : মাটি পরীক্ষার ভিত্তিতে সার সুপারিশমালা-২০১৬-এর আওতায় আধাবিস্তারিত মৃত্তিকা জরিপের মাধ্যমে ৪৬০টি উপজেলা ভূমি ও মৃত্তিকাসম্পদ ব্যবহার নির্দেশিকা প্রণয়ন এবং তথ্য-উপাত্ত হালনাগাদকরণের জন্য ২০টি উপজেলা ভূমি ও মৃত্তিকাসম্পদ ব্যবহার নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
হর্টেক্স ফাউন্ডেশন : তাজা শাকসবজি ও ফলমূল রপ্তানির পরিমাণ ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৬৭০ টন থেকে বেড়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ৫৫ হাজার ১৩৮ টন হয়েছে। রপ্তানি আয় প্রায় ৫১ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১২৫ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় তাজা আলু রপ্তানির হয়েছে। এ ছাড়া ৪৪ ধরনের প্রক্রিয়াজাতকৃত এক লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৮ টন কৃষিপণ্য ৯৪টি দেশে রপ্তানি হয়েছে, যার রপ্তানি মূল্য প্রায় ২২৪ মিলিয়ন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৭৭ টন টিনজাত (আনারস, বেবিকর্ন, ঘৃতকুমারী ও আনারস কোর চীন, তাইওয়ান, হংকং ও ভিয়েতনামে রপ্তানি হয়েছে, যার রপ্তানি মূল্য প্রায় ৯ লাখ ডলার।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ : সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উৎপাদনেও সাফল্য ধরা দিয়েছে। সর্বশেষ সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরে (২০১৫-১৬) দেশে মৎস্যসম্পদ উৎপাদিত হয়েছে ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন, যা এর আগের অর্থবছরে ছিল ৩৬ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন। একই সঙ্গে আগের তুলনায় বেড়েছে মাংস, দুধ ও ডিমের উৎপাদনও। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে এক হাজার ১৯১ কোটি ২৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৩১টি ডিম (সরকারি-বেসরকারি খামার মিলিয়ে) উৎপাদিত হয়। একই সময়ে সরকারি দুগ্ধ খামারে সাত লাখ ১৪ হাজার ৮৬ লিটার ও বেসরকারি দুগ্ধ খামারে ৭২৭ কোটি ৫০ লাখ লিটার নিয়ে মোট ৭২৭ কোটি ৫৭ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ লিটার দুধ উৎপাদিত হয়েছে। আর মোট মাংস উৎপাদিত হয়েছে ৬১ লাখ ৫২ হাজার টন।
সুত্রঃ কালের কণ্ঠ / কৃপ্র/এম ইসলাম