কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মাগুরা জেলায় চলতি মৌসুমে গমের ক্ষেতগুলো ব্লাস্ট নামক ছত্রাক জনিত রোগের বিস্তার ঘটেনি। ফলে গমের আবাদ ভাল হয়েছে। কৃষকরা ভালো ফলন পাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রবি মৌসুমে জেলায় ৫ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে গম চাষ চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজর ৪২৫ হেক্টর, শ্রীপুরে ২ হাজর ৩৮০ হেক্টর, শালিখায় ২৭৫ হেক্টর এবং মহম্মদপুর উপজেলায় ১ হাজার ৮০০ জমিতে গম চাষ হয়। চাষকৃত জমি থেকে ১৮ হাজার ১৭০ মেট্রিকটন গম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মাগুরার পার্শ্ববর্তি কয়েকটি জেলার গম ক্ষেতে ব্লাস্ট নামক এবছরও ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গমের দানা পরিপূর্ণ না হয়ে চিটা দেখা দেয়। এ কারণে এ বছর মাগুরাতেও গমের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এ কারণে গম চাষের শুরুতেই এ রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ বছর জেলায় মাত্র এক একর জেিমত এ রোগ দেখা দেয়। কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকরা সময়মত গম ক্ষেতে নাটিভা-নোভেটাসহ বিভিন্ন ধরনের ছাত্রাক নাশক ওষুধ স্প্রে করার এ রোগের বিস্তৃতি ঘটেনি। ফলে গমের দানা ভালো হয়েছে। জেলার ক্ষেতগুলোতে গম সফলের অবস্থা ভালো।
কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, এ বছর পুরো জমিতেই উচ্চ ফলনশীল জাতের গমের আবাদ হয়েছে। এ মৌসুমে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের আওতাধীন বাংলাদেশ গম গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল বারি-২৫, ২৬, ২৭, ২৮, শতাব্দী, সৌরভ ও প্রদীপ নামের বিভিন্ন জাতের গম চাষ হয়েছে। একর প্রতি ৪০ মণ গম ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছে কৃষকরা। সদর উপজেলার রাউতড়া গ্রামের কৃষক রাজু শেখ জানান- তিনি ২ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি গম-২৫ চাষ করেছেন। গম চাষের শুরু থেকেই ব্লাস্ট নামক ছত্রাক জনিত রোগ সম্পর্কে কৃষি বিভাগ তাকে সতর্ক করেছিল। তাদের পরামর্শে ক্ষেত পরিচর্যা করায় গম ভালো হয়েছে। চাষকৃত জমি থেকে প্রায় ১০০ মণ গম পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।
সদর উপজেলার নন্দলালপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান- চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় তিনি ১ একর জমিতে বারি-২৬ জাতের গম চাষ করেছেন। মাঠে ফসলের অবস্থা ভাল। চাষকৃত জমিতে ৩৫ থেকে ৪০ মণ গম পাওয়ার আশা করছেন তিনি। মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, এ বছর গম চাষের শুরু থেকে বিশেষ সতর্কতামুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। ফলে গম ক্ষেতে ব্লাস্ট নামক ছত্রাক জনিত রোগের বিস্তার ঘটেনি। বর্তমানে মাঠে গম সফলের অবস্থা ভালো। কৃষকরা ভালো ফলন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।