কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সাতক্ষীরা জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ২৮ থেকে ৩০ টন আলু উত্পাদন করেছেন চাষিরা যা বিগত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। তাছাড়া শুরু থেকেই বাজারে আলুর দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের চাষি নবদ্বীপ কুমার মণ্ডল জানান, চলতি মৌসুমে তিনি দুই বিঘা জমিতে কাঠিলাল জাতের আলু চাষ করেন। এরই মধ্যে তার ক্ষেতের সব আলু উত্তোলন করা হয়েছে। দুই বিঘা জমি থেকে এবার তিনি সাড়ে আট টন আলু পেয়েছেন। তিনি আরো জানান, জমি চাষ, বীজ রোপণ, সেচ, সার ও কীটনাশকসহ তার খরচ হয়েছিল ৩৬ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত আলু বিক্রি করেছেন ৭০ হাজার টাকার। এখনো যে পরিমাণ আলু মজুদ রয়েছে তা বিক্রি করে আরো ৩০-৩২ হাজার টাকা পাবেন বলে আশা করছেন।
একই গ্রামের আরেক কৃষক আবু বকর সিদ্দিক জানান, অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি দেড় বিঘা জমিতে ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করেছেন তিনি। এতে তার ২৮ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এর মধ্যে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করেছেন প্রায় ৪৫ হাজার টাকায়। আরো ২২-২৫ হাজার টকার আলু বিক্রি হবে বলে জানান তিনি। সাতক্ষীরা জেলা কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রওশন আলী জানান, এবার বাজারে বিপুল পরিমাণ আলু উঠেছে। মৌসুমের শুরু থেকে কৃষক প্রতি কেজি আলুর দাম পেয়েছেন ২৮-৩০ টাকা পর্যন্ত।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ মৌসুমে জেলার সাত উপজেলায় ৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭৩০, কলারোয়ায় ১০০, তালায় ১ হাজার ১১০, দেবহাটায় ২৮৫, কালিগঞ্জে ৭৬৫, আশাশুনিতে ১০০ ও শ্যামনগরে ৩৮০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ চাষ হয়েছে তালা উপজেলায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজি আব্দুল মান্নান জানান, অল্প সময়ে লাভজনক একটি ফসল গোল আলু। চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় ফসলটির বাম্পার উত্পাদন হয়েছে। হেক্টর প্রতি ২৮ থেকে ৩০ টন পর্যন্ত উত্পাদন করেছেন কৃষকরা— যা বিগত ১০-১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তিনি আরো জানান, জেলায় এবার ডায়মন্ড, কাঠিলাল ও স্থানীয় জাতের আলু চাষ হয়েছে।
সুত্রঃ বনিক বার্তা / কৃপ্র/এম ইসলাম