কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বাংলা সাহিত্যে পলাশ ফুলের প্রসঙ্গ এসেছে নানাভাবে। কবি নজরুল তাঁর একটি গানে লিখেছেন- হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল. এনে দে এনে দে নইলে. বাঁধব না, বাঁধব না চুল… এছাড়াও বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি দেশাত্মবোধক গানে এর উল্লেখ পাওয়া যায়- ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো একটি পলাশ ফুলের মালা
আমাদের দেশের এক সময়ের সকলের চির চেনা পলাশ গাছ ও পলাশ ফুল এখন আর চোখে পড়েনা। দেশের কোথাও এখন পলাশ গাছ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু এক সময়ে বন জঙ্গলের দিকে তাকালেই দেখা যেত পলাশ ফুল। তাই পলাশকে বলা হত বনের অগ্নিশিখা। এই অগ্নিশিখা বিলুপ্তি হওয়ার কারণ ইট ভাটায় এর কাঠ ব্যবহার। এ ছাড়া নতুন করে গাছ লাগানোর উদ্যোগ না নেয়ায় পুরনো গাছ সংরক্ষণ ও পরিচর্যা না করায় এ গাছ এখন বিলুপ্তির পথে।
টাঙ্গাইল ঘাটাইল পৌর এলাকার সিতেশ চন্দ্র চক্রবর্তী মাস্টারের বাড়ির চারপাশে দেখা মেলল ছোট বড় ২২টি পলাশ গাছের। ৮/১০টি গাছ বড় অন্যগুলো ছোট আকারের। জানা যায়, পলাশ বসন্তের প্রতীক। রঙভরা বসন্তে পলাশের বিশাল দখলদারিত্ব। পলাশ ফুটলেই বোঝা যায় ফাগুনে বনে আগুন লেগেছে। টিয়া পাখির ঠোঁটের সঙ্গে পলাশ ফুলের দারুণ মিল। সে জন্যই বুঝি পলাশ গাছে টিয়ার মেলা। আর একই কারণে পলাশের প্রচলিত ইংরেজি নাম ‘প্যারোট ট্রি’। আবার পলাশ দেখতে অনেকটা বক ফুলের মতো। সবকিছু মিলিয়ে পলাশ ফুল অসাধারণ। কিন্তু ফুলে নেই গন্ধ!
পলাশ মাঝারি আকারের পর্ণমোচী বৃক্ষ। শীতে গাছের পাতা ঝরে যায়। বসন্তে গাছ ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। পলাশ ফুলের রং আগুন লাল। আবার হলুদ ও লালচে কমলা রঙ্গের পলাশ ফুলও আমরা দেখে থাকি। পলাশ গাছের বাকল ধূসর। শাখা-প্রশাখা আঁকাবাঁকা। নতুন পাতা রেশমের মতো সূক্ষ্ম। গাঁড় সবুজ পাতা ত্রিপত্রী। হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের মত পলাশের গাঁড় সবুজ ত্রিপত্রী হিন্দু দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের প্রতীক। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কেউ কেউ মনে করেন পলাশ গাছের নিচে ভগবান গৌতম বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল।
কৃপ্র/ এম ইসলাম