কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সিলেট জেলার ওসমানীনগরে খরস্রোতা নাটকিলা নদী। এক সময় এ নদীর উত্তাল তরঙ্গে পাল্টে যেত মানুষের বসতির ঠিকানা, কালের বিবর্তনে সে নদী আজ নিজেই পাল্টে গেছে। একদা এই নদীর করাল গ্রাসে শত শত পরিবার হয়েছে ভিটে-বাড়িহারা। নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে হাজারো মানুষের স্বপ্নের নীড়। ওসমানীনগরের খরস্রোতা এই নাটকিলা নদীর বুকে এখন চলছে বালুর শাসন। স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও এই নদী খননের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় নদীটি হারিয়েছে তার যৌবন। প্রায় ১১.৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নদীটি বর্তমানে পরিণত হয়েছে খালে। নদীটি বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। নদীর বুকে গড়ে উঠেছে অবৈধ দখলদারদের বসতি।
জানা যায়, বুড়ি বরাক নদীর শাখা নদী নাটকিলা উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের কাটারমার খাল ও বুড়ি নদীর সাথে সংযোগ হয়ে কালাসারা হাওরের মধ্য দিয়ে গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের গদিয়ারচর, একারাই, মোবারকপুর, কলারাই, মুতিয়ার গাঁও প্রথমপাশা ও ভাগলপুর গ্রাম স্পর্শ করে বানাইয়া হাওরের সাথে মিলিত হয়েছে।
নাটকিলা নদীটি এ এলাকার ফসলের একমাত্র উত্স। বোরো মৌসুমে নাটকিলা নদীর পানিতে নির্ভরশীল এলাকার বেশ ক’টি হাওরের ফসল। বর্তমানে পলি মাটিতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে নদীতে তেমন পানি আটকা পড়ছে না। এতে এলাকার ভূমি খেকো চক্রটি বিভিন্ন ভরাট অংশ দখলে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। দখলদারদের কবলে পড়ায় নদীটি অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। আর এতে এলাকার হাওরগুলোর কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে ফসল ফলানো অনিশ্চিত হয়ে অনাবাদি পড়ে রয়েছে।
এদিকে ২০০৪ সালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মনির উদ্দিন নদীটি খননের জন্য পানি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর উদাসীনতার কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। ২০০৬ সালে আবারও একই প্রক্রিয়ায় নাটকিলা নদীটি খননের আবেদন করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। এছাড়া ২০০৮ সালে অর্ধলক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের নমুনা তৈরি করে পানি উন্নয়ন বোর্ডে পাঠানো হলেও অজানা কারণে তা আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ২০০৯ সালে উপজেলা কৃষি অফিস স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উক্ত নদীতে একটি স্লুইস গেইট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে একটি নমুনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠালেও রহস্যজনক কারণে তা আজও লাল ফিতায় বন্দি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মনির উদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব। এলাকার কৃষকদের স্বার্থে নদীটি জরুরি ভিত্তিতে পুনঃখননের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/এম ইসলাম