কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মেহেরপুর জেলার বুড়িপোতা গ্রামের চারিদিকে জাল দিয়ে ঘিরে কীটনাশক মুক্ত লাউচাষ হচ্ছে।ইউনিয়ন পরিষদের কোলঘেঁষে রাস্তার পাশে লাউচাষের জমি। সেই লাউচাষের জমির ওপর ও চারিদিকে জাল দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে পোকা প্রতিরোধে। ভেতরে তিনফুট উঁচু করে বেড়া ও মাচা। মাচায় ও বেড়ায় লকলকে সবুজ ডগায় লাউয়ের কুড়ি ধরেছে থরে থরে। চাষিদের ক্ষেতে উৎপাদিত লাউ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি হয় বলে জানালেন চাষিরা।
মেহেরপুর জেলার ১৬০ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। জেলায় এবার অন্তত ৪ হাজার ৭শ’ মেট্রিক টন লাউ উৎপাদন হবে এবং রোজ অন্তত ১৫ ট্রাক লাউ বিভিন্ন জেলায় রফতানি করা হচ্ছে।
সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের লাউচাষি আবু ওসমান জানান, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন। গড়ে প্রতিদিন তার জমি থেকে ৩শ টি করে লাউ সংগ্রহ হচ্ছে। যার দাম প্রায় ৩ হাজার টাকা। তিনি ওই জমি থেকে মোট সাড়ে তিন মাস থেকে চার মাস পর্যন্ত লাউ সংগ্রহ করতে পারবেন। কীটনাশক ও পোকা মুক্ত হওয়ার কারণে তার লাউয়ের চাহিদা অনেক। তার সাফল্য দেখে অনেকেই লাউচাষে আগ্রহী হয়েছে। তিনিও অন্যের দেখে আগ্রহী হয়ে লাউচাষ করেন বলে জানান। তার সাফল্যে আশ পাশের গ্রামগুলোতেও লাউচাষে মেতেছে কৃষকরা। বাণিজ্যিকভাবে এই লাউ চাষ করেই শত কৃষকের ভাগ্য বদলাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে।
কৃষকরা বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে লাউচাষ করতে বাঁশের মাচা, বীজ, সারসহ শ্রমিক খরচ মিলে বড় জোর খরচ হবে ১৫ হাজার টাকা। আর লাউয়ের দাম পাওয়া গেলে অন্তত ৫০ হাজার টাকা আয় হবে। সেক্ষেত্রে এক বিঘা জমি থেকেই একজন কৃষকের আয় হবে ৪০ হাজার টাকা। ফাল্গুন মাস থেকে লাউচাষ শুরু হয়। গরমের কারণে লাউয়ের চাহিদা বেশি হয়। শীতে লাউয়ের চাহিদা কম। লাউ না হলেও লাউয়ের ডগা সবজি হিসেবে বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠে আসে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লাউসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে মেহেরপুর এলাকার চাষিরা সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন। লাউ চাষে ঝুঁকি কম। পোকা-মাকড় প্রতিরোধ করতে পারলেই লাভবান হওয়া যাবে। মেহেরপুর জেলায় প্রতিবছরই লাউচাষ বাড়ছে। বর্তমানে ফুলকপি-বাঁধাকপিসহ বিভিন্নধরনের সবজির পাশাপাশি লাউ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এতে কৃষি বিভাগও খুশি।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম