কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ যশোরের মণিরামপুরে বোরো ধান ক্ষেতে ছত্রাকজনিত ব্লুাস্ট রোগের ভয়াবহ আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ফলনের শেষ পর্যায়ে এসে ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। এতে করে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হতাশায় পড়েছে কপোতাক্ষ-ভবদহ পাড়ের চাষিরা। স্থানীয় কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট ২৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম আবাদকৃত জাতের ধান সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে।
জলাবদ্ধ ভবদহ ও কপোতাক্ষ পাড়ের চাষিরা বিগত কয়েক বছর পর এবার সরকারি উদ্যোগে চাষযোগ্য জলাবদ্ধ জমি হতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করায় বিস্তীর্ণ এলাকায় বোরো আবাদ করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য আগাম আবাদকৃত জাতের ধান চাষে বেশি ঝুঁকে পড়েন চাষিরা। আগাম আবাদকৃত জাতের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে।
মূলত আগাম আবাদকৃত জাতের ধানের ক্ষেতই বেশি আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা, কুলটিয়া, মনোহরপুর, নেহালপুর, হরিদাসকাটি, খোদাপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ধান ক্ষেত বিছিন্নভাবে ছত্রাকজনিত ব্লুাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। স্থানীয় কৃষি দপ্তরের হিসাব মতে, এর পরিমাণ ২০ হেক্টর হলেও প্রকৃতপক্ষে তা ৩৫ হেক্টর ছাড়িয়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। দিনদিন এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকার পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং) কৃষিবিদ মো. গোলাম মারুফ সোমবার মণিরামপুরের বিভিন্ন এলাকায় ব্লুাস্ট আক্রান্ত ফসলের মাঠ পরিদর্শন ও স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তিনি জানান, চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ হতে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত তাপমাত্রা দিনে প্রায় ২৬ ডিগ্রির উপরে এবং রাতে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাওয়ায় প্যারিক্যুলারিয়া ওরিজে নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। এ সময় তিনি ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি সচেতন থাকতে চাষিদের পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে সচেষ্ট রয়েছে। কৃষি অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক চণ্ডি দাস কুণ্ডুু, উপপরিচালক কাজী হাবিবুর রহমান, উপজেলা কৃষি অফিসার সুশান্ত কুমার তরফদার, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার নাসরিন নাহিদ, উপসহকারী কৃষি অফিসার অঞ্জলী রানী, ফরহাদ শরীফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সুত্রঃ ভোরের কাগজ / কৃপ্র/এম ইসলাম