কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী বেতিল চরের কৃষক আব্দুস ছামাদ ১১ বিঘা জমিতে আড়াই মাস আগে রোপন করে ছিলেন বোরো ধানের চারা। সন্তানের মতই যত্ম নিয়েছিলেন ধান ক্ষেতের । সুস্থ্য-সবলভাবে বেড়ে উঠে ডোগায়-ডোগায় ধরেছিল পর্যপ্ত ধান। আর ১৫ দিন পরেই তা এই কৃষকের ঘরে উঠতো। কিন্তু যমুনায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি এই কৃষকের সে স্বপ্ন এখন গুড়ে বালি। তলিয়ে যাওয়া আধাপাকা এই ধানই শুক্রবার দিনভর আব্দুস ছামাদ তার সন্তানসহ ১০/১২ জন স্বজন এবং শ্রমিকেরা কোমড় পানি থেকে কাস্তে দিয়ে কেটে তুলছে। হঠাৎ দুর্যোগে এমন ক্ষতি তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।
কৃষক আব্দুস ছামাদ জানান, ‘বিঘায় ৪ হাজার টেহা কইড়া খরচ ওইছিল। আশা আছিল এবার ধানের বাম্পার ফলন ১৭ মন কইড়া ওইবো। কিন্তু নদীতে হঠাৎ পানি আইস্যা সব শ্যাস কইড়া দিছে। এখন আমার ৮ জনের সংসার কিভাবে চলবো। ঋণ কইড়া জমি গুলান আবাদ করছিলাম। এহন পথে বসা ছাড়া আমার উপায় নাই।’
এমনি আর্তনাদ সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলারবেতিল চরের মহিড় উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, নুরাল মিয়া, ধুলিয়াবাড়ির আশরাফ হোসেন মীর, আব্দুস ছামাদ, নওশাদ মীর, রশিদ কবিরাজের মত অসহায় কৃষকদের। তারা জানান, নির্বাচন এলে ঠিকই জনপ্রতিনিধিরা ভোটের জন্য আকুতি জানান। এখন আমাদের কেউ খোঁজ খবর নিতে আসে না। আমাদের সব ধান তলিয়ে গেছে। কাঁচা যে ধান কেটে আনার চেষ্টা হচ্ছে তা বিঘায় ১৭ মনের স্থলে ২/৪ মনের বেশি হবে না। তাই খরচা কোন ভাবেই তোলা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সরকার আমাদের পাশে না দাঁড়ালে পথে বসতে হবে।
এ ব্যাপারে সদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম সিরাজ জানান, হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধিতে কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এ অবস্থায় সরকার তাদের পাশে দাঁড়িয়ে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে দিলে তাদের ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে। সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, যমুনায় পানি বেড়ে কৃষকেরা এমন ক্ষতিতে পড়েছে স্থানীয় কৃষি অফিসগুলো আমাদের জানায়নি। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই এসব অসহায় কৃষকদের আমরা পাশে থাকবো।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম