কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বাংলা নাম দূর্বা, ইংরেজি নাম- Bermuda grass, বৈজ্ঞানিক নাম- Cynodon dactylon Pers. আমরা যাকে দূর্বা ঘাস হিসাবে চিনি, দূর্বা বহুবর্ষজীবি। কাণ্ড- বহু শাখায়িত। কাণ্ডে পর্ব গুলো থাকে স্পষ্ট। চ্যাপ্টা রোমহীন। গিটওয়ালা। লালচে। প্রতি পর্ব থেকে শেকড় গজায়। মাটিতে হেলে দুলে চলে বড় হয়। পাতা- পাতা রেখাকার। কাণ্ডকে পাতার খোল ঢেকে রাখে। গাছের রঙ হালকা সবুজ থেকে গাঢ় সবুজ। পাতা অল্প রোমযুক্ত। প্রান্ত সুচালো। ফুল-ফুল ধরা কাণ্ড খাড়া,আঙ্গুরের মত পুস্পমজ্ঞুরী শাখাম্বিত। এর পুস্পমজ্ঞুরী ৩টি থেকে ৫টি। পাশের দিকে চ্যাপ্টা। বোঁটা ছাড়া ফুল দুই সারীতে থাকে।
ফল-/বীজ- ফুল থেকে ফল ও বীজ হয়। সবুজ রঙের বীজ ছোট চকচকে। ফুল থেকে বীজ উৎপাদন হয়। এপ্রিল থেকে জুলাই মাসে ফুল ও বীজ পরিপক্ক হয় এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যে বীজ থেকে চারা গজায়।দূর্বা ঘাসের সম্পূর্ণ অংশ উপকারী । ট্রাইটারপিনয়েডস, এতে প্রোটিন ও মর্করা থাকে। এছাড়া জৈব এসিড পাওয়া যায়।
ব্যবহারঃ কাটা স্থানে দূর্বাঘাস বেটে বা দাঁত দিয়ে থেতলে লাগালে সঙ্গে সঙ্গে রক্ত ঝরা বন্ধ হয়। মেযেদের ঋতুস্রাব হচ্ছে না এরকম হলে দূর্বাঘাস বেটে এককাপ রস খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কাপ দূর্বা ঘাসের রসের সাথে সামান্য আখের রস মিশিয়ে খেলে অশ্বরোগ আরোগ্য হয়। দূর্বার কচি ডগা সামান্য সরিষার তেলসহ দাঁতের গর্ত করা স্থানে দিলে জীবাণু মারা যায় ও উপকার হয়। পায়ের একজিমা হলে চুলকিয়ে দূর্বাঘাসের রস দিলে কয়েকদিনে ভালো হয়। অরুচি,শ্রান্তি,পিত্তদাহ,বমি ও রক্ত দোষ নাশক হিসাবে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে দূর্বার মুল সমপরিমান দূর্বার পাতার রস ও পানি জ্বাল দিয়ে ক্বাথ তৈরী করে ক’দিন খেলে উপকার পাওয়া যায়।
মুখের ব্রন সাড়াতে এককাপ দূর্বার রস এককাপ পুরাতন ঘি ভেজে মুখ ধুয়ে লাগালে ব্রন ভালো হয়। একভাগ দূর্বার রস একভাগ তিলের তেল তিনমাস নিয়মিত সপ্তাহে দুই দিন মাথায় দিলে চুলপড়া বন্ধ হয়। দাঁতের পায়োরিয়া সাড়াতে দূর্বা ঘাসের রস ও দুধ মিশিয়ে দাঁত মাজলে পায়োরিয়া ভালো হয়। শরীরের বাত ব্যাথা রোগ হলে দূর্বার রস তার সমপরিমান কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে সমান পরিমান দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে ভালো হয়। দূর্বা ও আতপ চাল সমান সমান নিয়ে একসঙ্গে বেটে বড়া করে বানিয়ে সপ্তাহে তিন/চার দিন ভাতের সাথে খেলে সুফল পাওয়া যায়।
কৃপ্র/এম ইসলাম