কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মাছ ও পোল্ট্রিসহ গবাদিপশুর খাবার তৈরিতে ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার বন্ধে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ রবিবার এ আদেশ দেয়। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।২০১০ সালের ২৪ জুলাই ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে ‘বিষাক্ত মুরগির খাদ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি/মাছ উৎপাদনেও ব্যবহার হচ্ছে ট্যানারি বর্জ্য’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পরদিন ২৫ জুলাই দৈনিক যুগান্তরে ‘আলোচনা সভায় বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতারা, ট্যানারি বর্জ্য মিশিয়ে পোল্ট্রি ফিড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এখনই বন্ধ করতে হবে’ শিরোনামে আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে একটি রিট করা হয়। সেই রিটের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৬ জুলাই ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে মাছ ও পোল্ট্রি ফিড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে।
২০১০ সালের ২৬ জুলাই জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এডভোকেট মনজিল মোরসেদ এ বিষয়ে একটি রিট মামলা দায়ের করেছিলেন। আবেদনে বলা হয়, ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করে তৈরি করা খাদ্য মুরগি ও মাছ উভয়ের জন্যই অস্বাস্থ্যকর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাদ্য দিয়ে চাষ করা মুরগি ও মাছ খেলে মানুষের জন্যও মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এরপর ২০১১ সালের ২১ জুলাই বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে তৎকালীন একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে বর্জ্যকে মাছ-মুরগির খাবার তৈরির কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেয়।
২০১১ সালের ২১ জুলাই রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ে ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করে মৎস্য ও পোল্ট্রি ফিড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বন্ধে শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, খাদ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য ও পশু খাদ্য আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দিয়েছিলেন আদালত। হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ফিশ মিট ও অ্যানিমেল গ্লু-প্রস্তুতকারক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার লিভ টু আপিল করেন। সেই লিভ টু আপিল গত ৭ ডিসেম্বর খারিজ করে দেয় আদালত। এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আনা একটি আবেদনও আজ নাকচ করে দেয় আপিল বিভাগ।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম