কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বগুড়ার পীরহাটা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ হুমায়ূনের ধানক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এতে চিটা ও ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা তার। ফসল রক্ষায় কয়েকটি ধানগাছ নিয়ে তিনি এসেছিলেন ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে। গাছ দেখে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ওষুধ ও পরামর্শ লিখে দিয়েছেন। হুমায়ূনের মতো আশপাশের কয়েকশ কৃষক এভাবে চিকিত্সা নিয়ে ফিরেছেন ডিজিটাল ফসল ক্লিনিক থেকে।
জানা গেছে, কৃষকদের সুবিধার্থে ২০১৬ সাল থেকে ধুনটে নিয়মিত ডিজিটাল ফসল ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এরই অংশ হিসেবে গত সোমবার মথুরাপুরে এ ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। এ ক্লিনিকে ধান, মরিচ, বেগুন, মুগ ডাল, আম, লিচু, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন ফসল এবং ভারী বৃষ্টিপাত ও উচ্চ তাপমাত্রাসহ নানা সমস্যা মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদরা। এছাড়া ডিজিটাল উপায়ে সারের পরিমাণ বের করা, কৃষি কলসেন্টারে সেবা পাওয়ার পদ্ধতি এবং ই-কৃষি সম্প্রসারণ সেবা সম্পর্কে কৃষকদের অবহিত করা হয়। এ ক্লিনিকে কৃষকদের সরাসরি পরামর্শ দেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার মদক, আদম আলী খান, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, তাহেরা ইয়াসমিন, আব্দুস সোবহান, শাহিনুর ইসলাম ও উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মুনজুরুল ইসলাম।
কৃষক মোহাম্মদ হুমায়ূন জানান, ব্যবসায়ীর পরামর্শে ধানক্ষেতে ব্লাস্ট দমনে কীটনাশক ব্যবহার করেছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। এ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত ছিলাম। মাইকে ভ্রাম্যমাণ ডিজিটাল ফসল ক্লিনিকের কথা শুনে ধানের গাছ নিয়ে যাই। কৃষিবিদরা প্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে দিয়েছেন। এবার কাজ হবে।
রামনারায়ণপুর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ধানগাছে পাতাপোড়া রোগ আক্রমণ করেছে। ক্লিনিকে এসে এ রোগ থেকে ক্ষেত রক্ষার উপায় জেনে তিনি খুশিমনে বাড়ি ফিরেছেন। কৃষি কর্মকর্তারা তাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান হারুনর রশীদ সেলিম বলেন, ভ্রাম্যমাণ ডিজিটাল ফসল ক্লিনিক নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা দক্ষ কৃষিবিদদের সঙ্গে নিয়ে কৃষকের কাছে এসে ফসলের চিকিত্সা দিয়েছেন। এতে কৃষকের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তাদের সখ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আগামীতে কৃষকের মাঝে চাষাবাদে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নেয়ার প্রবণতা বাড়বে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মানুষের যেমন চিকিত্সার প্রয়োজন হয়, একইভাবে ফসলের চিকিত্সা প্রয়োজন। কিন্তু কৃষকের মধ্যে সচেতনতা না থাকায় তারা ফসলের চিকিত্সা নিতে যান না। এ কারণে ২০১৬ সাল থেকে ভ্রাম্যমাণ ডিজিটাল ফসল ক্লিনিকের মাধ্যমে কৃষকদের ফসলের চিকিত্সা দেয়া হয়। মথুরাপুরে ২৪০ জন কৃষক ফসলের চিকিত্সা ও অন্যান্য সেবা গ্রহণ করেছেন।
সুত্রঃ বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম