কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশগুলো বাজেট বাড়ানোর পরও এখনো প্রায় ২০০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন থেকে বঞ্চিত।গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন এক প্রতিবেদন এ তথ্য দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। একই সঙ্গে এও জানিয়েছে যে, সবচে বিপজ্জনক পরিস্থিতি হচ্ছে এই ২০০ কোটি মানুষ মানব মল দ্বারা দূষিত পানি ব্যবহার করে থাকে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে এই দূষিত পানি পানে বাধ্য হয়ে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এই খাতে আরো ব্যাপক ভিত্তিক বিনিয়োগের ওপর জোর দিয়েছে সংস্থাটি।
এক বিবৃতিতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মারিয়া নিরা বলেন, বর্তমানে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ মল দ্বারা দূষিত উৎস থেকে পানি ব্যবহার করে। ফলে তারা কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড এবং পলিওতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকছে। তিনি আরো বলেন, দূষিত পানি পানের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর পাঁচ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এবং আশঙ্কার কথা হচ্ছে উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে এটি সবচে কম গুরুত্ব পাওয়া একটি রোগ। এমন আরো কিছু রোগের মধ্যে আছে: কৃমি, সিস্টোসোমিয়াসিস এবং ট্রাকোমা।
২০১৫ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য বিমোচন এবং নিরাপদ ও সুলফ পানি ও স্যানিটেশন প্রাপ্যতা নিশ্চিত করাসহ মানবকল্যাণে এক উচ্চাভিলাসী অগ্রগতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু জাতিসংঘ পানি বিভাগের পক্ষে বৃহস্পতিবার বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, এখনই বিনিয়োগের পরিমাণ ব্যাপকভাবে না বাড়ালে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাষ্ট্রগুলো অনেক দূর পিছিয়ে থাকবে।
তবে একটা আশার কথা হচ্ছে, পানি, স্যানিটেশন এবং পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে গত তিন বছরে বার্ষিক বাজেট বেড়েছে ৪.৯ শতাংশ। তারপরও ৮০ শতাংশ দেশ স্বীকার করেছে, জাতীয় পর্যায়ে নিরাপদ পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তাদের এই বাজেট কোনোভাবেই যথেষ্ট নয়। এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, অনেক উন্নয়নশীল দেশেরই বর্তমান জাতীয় লক্ষ্যমাত্রাগুলো নির্ধারণ করা হয় মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু নিরবচ্ছিন্নভাবে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য সেবা দিতে গেলে এটি যথেষ্ট নয়।
অপরদিকে বিশ্বব্যাংক বলেছে, শুধু অবকাঠামো নির্মাণেই বরাদ্দ তিনগুণ বাড়িয়ে ১১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার করা উচিত। ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ছাড়াই্ এই অর্থ বিনিয়োগ দরকার। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রধান এবং জাতিসংঘের পানি বিভাগের প্রধান গাই রিডার বলেন, আমাদের যে সামর্থ্য আছে তাতে এটি অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থায় বর্ধিত বিনিয়োগ জনস্বাস্থ্য এবং উন্নয়নে যথার্থ ফল বয়ে আনতে পারে। এটি আমাদের কর্মসংস্থানও বাড়াবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম