কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইরে যে ধলেশ্বরী নদীর উত্তাল তরঙ্গে পাল্টে যেত মানুষের বসতির ঠিকানা, কালের বিবর্তনে সে নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এক সময় এ নদীর করাল গ্রাসে শত শত পরিবার হয়েছে ভিটে-বাড়িহারা। নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে হাজারো মানুষের স্বপ্ন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মতে, অতীত কাল থেকে এ নদী মানিকগঞ্জ জেলার মধ্য দিয়েই প্রবাহমান। নদীটির উত্সমুখ মানিকগঞ্জের তিল্লী থেকে শুরু করে গড়পাড়া, ফকুরহাটি, জায়গীর, কৃঞ্চপুর, বেতিলা, মিতরা, আটিগ্রাম, বায়রা, তালেবপুর, সিংগাইর, জয়মন্টপ ও ধল্লা ইউনিয়ন পর্যন্ত। এ নদীতে বছরজুড়ে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান ছিল। তখন ধলেশ্বরীর তীরবর্তী কাজলকোড়ী, তিল্লী, জায়গীর, মেঘশিমুল, উক্রা, মানিকগঞ্জ, বেতিলা, বায়রা, সিংগাইর, জয়মন্টপ, পালপাড়া প্রভৃতি স্থানে স্টিমার ঘাট ছিল। তিল্লী, বায়রা এবং মানিকগঞ্জ ছিল সরকারের বড় এবং ব্যস্ত বন্দর নগরী। নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন হাট-বাজার। তারমধ্যে সিংগাইর, বায়রা, জয়মন্টপ ও তিল্লী এলাকায় ছিল বিখ্যাত হাট। এছাড়া মানিকগঞ্জের বালিরটেক হাটে ছিল বিখ্যাত নদী বন্দর। কিন্তু কালের গর্ভে গত ৩০ বছর ধরে নদীটি মরা গাঙ্গে পরিণত হয়েছে। একেবারেই হারিয়েছে তার যৌবন। বর্তমানে পলি মাটিতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এতে বর্ষা মৌসুমসহ প্রায় সারা বছরই ধলেশ্বরী নদী থাকে পানিশূন্য। ফলে কৃষি প্রাণ বৈচিত্র্য হুমকিতে পড়েছে। আর এতে এলাকার কৃষকদের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ফসল ফলানো অনিশ্চিত হয়ে অনাবাদি পড়ে আছে।
এদিকে ঢাকার অতি কাছে সিংগাইর উপজেলার ফোর্ডনগর এলাকাটি। ঢাকার পাশে এবং এ ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে হওয়ায় এবং নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় দেশের ধণাঢ্য ব্যবসায়ীদের নজরে পড়েছে এলাকাটি। আর অধিক গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার সুবাদে নদীর বুকে গড়ে উঠেছে বসতি আর মিল কারখানা। এতে এলাকার ভূমিখেকো চক্রটি নদী দখলে মড়িয়া হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে চলছে বালুশাসন। অবৈধ দখলদারদের কবলে পড়ায় নদীটি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। ভেকু ও ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ভরাট করা হচ্ছে নদী। চলছে অবৈধ দখলদারদের প্রতিযোগিতা।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম