কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বস্নাস্ট ধানের মারাত্মক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগ পাতায় হলে পাতা বস্নাস্ট, গিঁটে হলে গিঁট বস্নাস্ট ও শীষে হলে শীষ বস্নাস্ট বলে। পাতায় বস্নাস্ট হলে প্রথমে ছোট ছোট ডিম্বাকৃতির দাগ তৈরি করে। আস্তে আস্তে দাগ বড় হয়ে চোখের আকার ধারণ করে। দাগের চার ধারে বাদামি ও মাঝের অংশ সাদা বা ছাই বর্ণ ধারণ করে। অনেক দাগ একসঙ্গে মিশে পুরো পাতা মারা যায়। এ রোগের কারণে জমির সব ধান নষ্ট হতে পারে।
গিঁট বস্নাস্ট এবং শীষ বস্নাস্ট হলে গিঁট ও শীষের গোড়া কালো হয় এবং ভেঙে পড়ে। পরিশেষে ধান চিটা হয়। রাতে ঠাণ্ডা , দিনে গরম, রাতে শিশির পড়া এবং সকালে কুয়াশা থাকলে এ রোগ দেখা যায়। এই ছত্রাক জীবাণু ধান গাছের যে কোনো অবস্থায় আক্রমণ করতে পারে। এ রোগে প্রথমে পত্র ফলকে অতি থান্ট ডিম্বাকৃতি দাগ পড়ে। এ দাগের মাঝামাঝি অংশ প্রশস্ত হয় এবং দুই প্রান্তে সরু থাকে যাতে দাগটাকে মনে হয় অনেকটা চোখের মতো। বড় দাগগুলোর (০-১.৫ ০.৩-০.৫ সেন্টিমিটার) কেন্দ্র ভাগ ধূসর বর্ণের হয়। আক্রমণপ্রবণ ধানের পাতা মরে যেতে পারে। কিন্তু প্রতিরোধক জাতের পাতার মধ্যে আলপিনের মাথার মতো ছোট বাদামি দাগকে বাদামি দাগ রোগ বলে ভুল হতে পারে।
ধানের বস্নাস্ট রোগ কা-ের গিঁটেও আক্রমণ করতে পারে। গিঁট পচে গিয়ে কালচে হয় এবং সহজেই ভেঙে যায়। ছড়া বা শীষের গোড়া আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত অংশ কালচে হয়ে ভেঙে যেতে পারে যাকে শীষ বস্নাস্ট বলে। অধিক মাত্রায় নাইট্রোজেন সার এবং বাতাসের আর্দ্রতা এ রোগের প্রকোপ বাড়ায়। এ ছাড়া রাতে ঠাণ্ডা, দিনে গরম ও সকালে শিশির পড়া এ রোগের প্রকোপ বাড়ায়। মাঠে এ রোগের আক্রমণ ব্যাপক হলে পুড়ে বসে যাওয়ার মতো হয়।
ধানের বস্নাস্টের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা হচ্ছে রোগমুক্ত জমি থেকে বীজ সংগ্রহ করা। সুষম মাত্রায় ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা। জমিতে সব সময় পানি রাখা। ধানের বস্নাস্ট প্রতিরোধক জাতের ধান বিআর৩, বিআর৫, বিআর১৪, বিআর১৫, বিআর১৬, বিআর২৫, বিআর২৬ ব্রিধান ২৮, ব্রিধান৩২, ব্রিধান৩৩ ব্রিধান ৪৪ এবং ব্রিধান ৪৫ ইত্যাদি চাষ করা।
কৃপ্র/ এম ইসলাম