কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ঝিনাইদহ জেলায় শাক-সবজি চাষে ব্যাপকভাবে কীটনাশকের ব্যবহার হচ্ছে। মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এসব কীটনাশক ব্যবহার নিষেধ সত্ত্ব্বেও চাষিরা দেদার তা ব্যবহার করে যাচ্ছে। এমন কোনো শাক-সবজি নেই, যাতে যথেচ্ছ কীটনাশক ছিটানো হয় না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কীটনাশকের ব্যবহার বিষয়ে চাষিদের সচেতনতা সৃষ্টি করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। যদিও কীটনাশক কোম্পানির মাঠ পর্যায়ের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা কীটনাশক ব্যবহারে চাষিদের উত্সাহিত করে বলে অভিযোগ করা হয়।
দেশের অন্যতম প্রধান শাক-সবজি উত্পাদনকারী এলাকা হচ্ছে ঝিনাইদহ জেলা। সারা বছর ধরে এ জেলায় শাক-সবজি চাষ হয়ে থাকে। বিভিন্ন স্থানে সবজির হাট বসে। পাইকাররা এসে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন শহরে চালান নিয়ে যায়।
সারা বছর ধরে এখানে প্রতিদিনের একটি দরকারি সবজি বেগুনের চাষ হয়। আর সবচেয়ে বেশি কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে বেগুনে। বেগুনে ভার্টিমেক্স, প্রোক্লেম, সবিক্রন, প্রাইজ, সুপ্রিম, এলবা প্রভৃতি কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে কীটনাশক ব্যবহারে কোনো নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। এমনকি সকালে কীটনাশক ছিটানোর পর পরই ক্ষেত থেকে বেগুন তুলে তা হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। ঢেঁড়সে ব্যবহার করা হচ্ছে কোহিনুর, প্রোক্লেম, লাকান, জাদা ও রিপকড। পুঁইশাকে এবামেকটিনবেনজয়েট ও ইনিডাক্লোরোফিড জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। করলায় ব্যবহার করা হচ্ছে থায়ামেথোক্সাম, পটল ক্ষেতে ব্যবহার করা হচ্ছে ভার্টিমেক্স ও ফ্লোরা নামের কীটনাশক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিক বিষযুক্ত ভারতীয় কীটনাশক চোরাপথে আনা হয়। তা গোপনে শাক-সবজিতে ব্যবহার করা হয়। ফুড ক্রপে নিষিদ্ধ কীটনাশকও শাক-সবজিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন অসময়ে ফুল ও বাঁধাকপির চাষ হচ্ছে। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার হচ্ছে উচ্চমাত্রার কীটনাশক। এসব প্রতিরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ শোনা যায়।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ মো. আকরামুল হক বলেন, কীটনাশক ছাড়া চাষিদের শাক-সবজি চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া ও উদ্বুদ্ধকরণ করা হচ্ছে। তারপরও যথেচ্ছ কীটনাশকের ব্যবহার থামানো যাচ্ছে না। তিনি জানান, কীটনাশক ছিটানোর সাতদিন পর ক্ষেত থেকে সবজি তুলে খেলে ক্ষতি হয় না।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/এম ইসলাম