কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ গ্রামাঞ্চলের অপুষ্ট শিশু ও গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের মধ্যে অনুপুষ্টি সমৃদ্ধ ছোট মাছ খাওয়ার পরিমাণ বাড়ছে। ফলে তাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বাস্থ্যসূচকের অগ্রগতি হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামাঞ্চলের দরিদ্রতম পরিবারের গর্ভবতী ও শিশুদের স্থায়ী অন্ধত্ব, মাতৃমৃত্যু, শিশু মৃত্যু ও শৈশবমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ অপুষ্টি। রংপুরের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, অনুপুষ্টি সমৃদ্ধ ছোট মাছ মলা, দারকিনা ও ঢেলা শিশু, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের সহজেই পুষ্টি সমস্যার সমাধান করতে পারে। তিনি বলেন, পুষ্টির অভাবে শিশুদের মস্তিষ্কের সাধারণ বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন অঙ্গ ও মেধার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। অপুষ্টির কারণে গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মহিলারা নানা রোগে আক্রান্ত হন।
ডা. হোসেন বলেন, তাই তারা ছোট মাছ ও সবজি খেয়ে সহজেই পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করতে পারেন। প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. মফিজুল ইসলাম মন্টু বলেন, সুস্থ জাতি গঠনে এখনও গ্রামাঞ্চলের দরিদ্রদম পরিবারের শিশু এবং গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের পুষ্টি এক বড় সমস্যা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (আরএমসিএইচ) গাইনোকোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়াসমিনাও একই কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি সুস্থ জাতি গঠনের একটি বাধা। আরএমসিএইচ-এর গাইনোকোলজির আরেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকর ডা. কামরুন নাহার বলেন, ছোট মাছ ও সবজি পুষ্টি নিশ্চিত করে। এতে নিরাপদ প্রসব ও সুস্থ শিশুর জন্ম দেয়। এছাড়া দুগ্ধদানকারী মায়ের দুধ বৃদ্ধি পায়। আরএমসিএইচ-এর পরিচালক ডা. মওদুদ হোসেন রাবু নিয়মিত পুষ্টিসমৃদ্ধ ছোট মাছ খাওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, এরফলে শিশুর দৈহিক গঠন শক্ত হয় ও মেধার বিকাশ ঘটে।
বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষ সাধারণত তাদের খাদ্য তালিকায় ছোট মাছ রাখতে চায় না। যদিও তাতে পুষ্টির বিভিন্ন উপাদান, মিনারেলস ও ভিটামিন রয়েছে এবং তা শিশুর বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। তিনি আরও বলেন, অনুপুষ্টি সমৃদ্ধ ছোট মাছ শুধু পুষ্টির চাহিদাই পূরণ করে না, বরং তা মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু ও শৈশবমৃত্যুর হার কমায় এবং স্থায়ী অন্ধত্ব দূর করে স্বাস্থ্য সূচকের উন্নতি ঘটায়।
রংপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান জানান, বর্তমানে উত্তরাঞ্চলে ছোট মাছের উৎপাদন বাড়ছে। ছোট পুকুর, খাল, বিল ও জলাভূমিতে এখন ছোট মাছের চাষ হচ্ছে।
তিনি বলেন, এরফলে গ্রামাঞ্চলে এখন ছোট মাছের উৎপাদন বাড়ছে এবং মানুষ ছোট মাছ খাচ্ছে। এতে পুষ্টির অভাব দূর হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু এবং গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মহিলারা ছোট মাছ খেয়ে তাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারচ্ছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম