কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ লক্ষীপুরের প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন পানির নিচে। চার দিনের ভারী বর্ষণে আবাদি জমির প্রায় ৮০ ভাগ সয়াবিন পানির নিচে ডুবে গেছে। ফলে ক্ষেতে অতিরিক্ত পানি জমায় মরে যাচ্ছে সয়াবিন গাছ। ডুবে থাকা সয়াবিনের চারায় পচনও লেগেছে। অসময়ের এমন বৃষ্টি যেন কৃষকদের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। এমন পরিস্থিতির কারণে সয়াবিন চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। এমনকি এর প্রভাব আগামী আমন মৌসুমেও পড়বে বলে ধারণা করছে চাষীরা।
চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ৯২ হাজার ৩৩৬ হেক্টর জমিতে রবি ফসলের আবাদ হয়। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি চাষ হয় সয়াবিনের। জেলায় মোট ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ করা হয়। কিন্তু গত চার দিনের ভারী বর্ষণে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন এখন পানি নিচে রয়েছে। সয়াবিন গাছের প্রায় ১০ থেকে ২০ ভাগ সয়াবিন পাকা। ক্ষেতে থৈ থৈ বৃষ্টির পানি জমা। অব্যাহত বৃষ্টিতে বাড়ছে এ পানি। পানি সরানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে জমে থাকা পানির কারণে মরে যাচ্ছে সয়াবিন গাছ।
উপজেলার চর সীতা, চর বাদাম, আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চর আবদুল্লাহ, কমলনগর উপজেলার চর ফলকন, চর জাঙ্গালিয়া, চর কালকিনি, চর মার্টিন, চর লরেন্স, চর কাদিরা, চরবসু, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবনীগঞ্জ, চর উভুতি, আবিরনগর, লাহারকান্দি চর রমনিমোহন; এছাড়াও জেলার রায়পুর ও রামগঞ্জের বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল এখন পানির নিচে। এতে সয়াবিনসহ বিভিন্ন রবি ফসল ডুবে যায়।
কৃষকরা জানায়, ৮/১০ দিন পর সয়াবিন কেটে ঘরে তোলা যেত। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে সয়াবিনসহ বিভিন্ন ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। পানি শুকাতে শুকাতে সয়াবিন গাছ মরে যাবে; ফসল আর ঘরে তোলা যাবে না। বিভিন্ন ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষক, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় স্কুল শিক্ষকদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবাদি সয়াবিনের প্রায় ৮০ ভাগ বর্তমানে পানির নিচে রয়েছে। পানির নিচে থাকা সয়াবিন থেকে ১০ ভাগ ফসলও আশা যাচ্ছে না।
লক্ষীপুর কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে লক্ষীপুরে মোট ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রামগতিতে ১৮ হাজার ২০০ হেক্টর, কমলনগরে ১৬ হাজার ৩১০ হেক্টর, রায়পুরে ৭ হাজার ৯৬০ হেক্টর, লক্ষীপুর সদর উপজেলায় ৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর ও রামগঞ্জে ৮৫ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ হয়।
কৃপ্র/এম ইসলাম