‘হাওরের পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রয়েছে’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নেত্রকোনা জেলার হাওর এলাকা পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) হাওর ও চর উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের একটি বিশেষজ্ঞ দল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি, মৎস্য, পশুপালন ও কৃষিঅর্থনীতিবিদের নিয়ে একটি সমন্বয়ক দল নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জের তেঁতুলিয়া গ্রামের ডিঙ্গাপোতা হাওরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।
বাকৃবির হাওর ও চর উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও কৃষিতত্ত্ববিদ প্রফেসর ড. মো. আবদুর রহমান সরকারের নেতৃত্বে গবেষক দলে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন প্রফেসর ড. আবু হাদী নূর আলী খান, প্রফেসর ড. সুবাস চন্দ্র দাস,প্রফেসর ড.মোঃ সাইদুর রহমান, ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. জাকির হোসেন, গবেষকদলটি হাওরটির বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি ও মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে। পানির বেশ কিছু পরীক্ষা করেন দলটি । তাৎক্ষণিক নমুনা পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফল থেকে তাঁরা জানান, গভীর হাওর থেকে শুরু করে কয়েকটি স্থানের পানি পরীক্ষা করে পানির পিএইচ গড়ে (৭.৫), পানিতে দ্রবিভূত অক্সিজেন (৪-৬.৫), অ্যামোনিয়া গ্যাসের (.০২%),ইলেকট্রিক কনডাকটিভিটি ৮৪,টিডিএস ১৩৫ পিপিএম পাওয়া গেছে যা পরিমানগত স্বাভাবিক মাত্রা বলেও জানান তারা।
পানিতে ভারী ধাতু আছে কিনা ও অধিক গবেষণার জন্য মাটি ও পানির নমুনা সংগ্রহ করেছেন যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যাধুনিক কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হবে। তাঁরা আরও বলেন, কচি ধান পানিতে তলিয়ে এনঅ্যারোবিক ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ার ল্যাকটিক এসিড তৈরি হওয়ায় পানির পিএইচ, পানিতে অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইট গ্যাসসহ অন্যান্য গ্যাস তৈরি হওয়ায় মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর মৃত্যুও হয়েছে। কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত বৃষ্টি পানি মিশে অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
সরজমিনে পরিদর্শনে শেষে ড. মো. আবদুর রহমান সরকার বলেন, বোরো ধান পাকার আগেই টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে অকাল বন্যায় চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জের বোরো আবাদের ৯০ভাগ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। একমাত্র ফসল হারিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন সাধারণ কৃষকরা। তবে ধান পাকা কিংবা আধা পাকার আগেই এমনটি হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ শতভাগ হবে জানান এই কৃষিতত্ত্ববিদ। গবেষকগণ জানান , হাওরের পানির বর্তমান অবস্থা ভালো। পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে মাছ কিংবা জলজ এলাকায় বসবাসরত প্রাণির মারা যাওয়ার আর কোন সম্ভাবনা নেই। আরও জানান ফসল ও মাছের ক্ষতির বিষয়টি সঠিক হিসাব তারা দ্রুত সরকারকে জানাবেন।
বিশেষজ্ঞ দল জানায় যেসকল জমিতে আমন ফসল করা সম্ভব সেখানে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে আগাম আমন ধানের চাষ করে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যেতে পারে । রবি মৌসুমে আগাম সরিষা, ডালজাতীয় ফসল, চিনা বাদাম, ভ’ট্টা, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি চাষে কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।
কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু / কৃপ্র/এম ইসলাম